সংযুক্ত আরব আমিরাতে মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২০৩ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে ৩১ জন প্রবাসী বাংলাদেশী রয়েছেন। এ মহামারিতে মৃত্যুর পর শেষবারের মতো দেশে ফেরার সুযোগও হারাচ্ছেন ভাগ্যাহত এসব প্রবাসী। পরবাসেই তাদের জানাতে হচ্ছে শেষ বিদায়। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সমাহিত করা হচ্ছে তাদের।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির নাম-পরিচয় গোপন রাখছে আমিরাতে স্থানীয় গণমাধ্যম। করোনায় মৃত্যু হলে নিজ নিজ দেশের নাগরিকের তথ্য দূতাবাসগুলোতে জানিয়ে দিচ্ছে আমিরাতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
তারপরও বিভিন্নভাবে অনেকের নাম প্রকাশ পাচ্ছে। এদের একজন চট্টগ্রামের চন্দনাইশ পৌরসভার দিদারুল ইসলাম বাবুল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ৩ মে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস আল খাইমায় মৃত্যুবরণ করেন। ঐদিন রাস আল খাইমার স্থানীয় কবরস্থানে বাবুলের লাশ দাফন সম্পন্ন হয়।
চট্টগ্রামের বাবুলের মতো সিলেট মৌলভীবাজারের সেলিম উদ্দিন প্রায় ১৪ দিন করোনার সঙ্গে লড়াই করে গত রোববার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে মারা যান। সোমবার দুবাইয়ের মুহাইছেনা কবরস্থানে তার লাশ দাফন সম্পন্ন হয়।
এছাড়া ১০ মে রাস আল খাইমায় স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয় করোনায় মৃত চট্টগ্রামের হাটহাজারীর নাঙ্গলমোরা ইউনিয়নের বাদশা মিয়ার লাশ। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ধর্মপুর ইউনিয়নের দুই সহোদর শাহ আলম ও বেদারুল ইসলামের লাশও আবুধাবীর স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। আবুধাবির বানিয়াছ কবরস্থানে দাফন করা হয় চাঁদপুরের ইদ্রিস ভূঁইয়াকে।
হিন্দু ধর্মের রীতি অনুযায়ী আমিরাতের আল আইনে সৌভন মিত্র নামে একজনের সৎকার করা হয়েছে। প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার লিটন কান্তি সাহার লাশেরর সৎকারের।
আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মিজানুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩১ প্রবাসী বাংলাদেশী মারা গেছেন। তাদের প্রায় প্রত্যেকের লাশ সমাহিত করা হয়েছে স্থানীয় বিভিন্ন কবরস্থানে। সম্প্রতি দূতাবাসকে সরাসরি অবগত করার আগেই কিছু লাশের দাফন হয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
করোনায় মারা যাওয়া প্রবাসীর পরিবারকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়ে মিজানুর রহমান বলেন, পরবাসে করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের লাশ নিরাপত্তার বিবেচনায় দেশে পাঠানো যাচ্ছে না। তবে লাশ বিদেশে দাফনের সঙ্গে ক্ষতিপূরণের টাকার সম্পর্ক নেই। দূতাবাস থেকে স্থানীয়ভাবে লাশ দাফন হয়েছে মর্মে প্রত্যেক পরিবারকে একটি সনদ ইস্যু করে দেয়া হবে। সরকারের ঘোষিত ক্ষতিপূরণ পেতে এটি সহায়ক হবে এ সনদ।