কোরআন পার্কের উদ্বোধন

519

কোরআন পার্কের উদ্বোধন

সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ‘কোরআন পার্ক’ উদ্বোধন করা হয়েছে। ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআনে উল্লিখিত বিভিন্ন উদ্ভিদ ও অলৌকিক ঘটনা দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরতেই এ পার্কটি ও বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। সব ধর্ম-বর্ণের লোকদের বিনামূল্যে এতে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার (৩০ মার্চ) বিকেল ৩টায় দুবাই মিউনিসিপ্যালিটির সার্বিক আয়োজনে ও আনুষ্ঠানিকতায় এলাকায় এটি উদ্বোধন করা হয়েছে। নির্মাণকাজ শুরুর সময় প্রায় ৭৫ লাখ ডলার বা ৫৭ কোটি ৩৬ লাখ ছয় হাজার টাকা ব্যয়-খরচ ধরা হয়েছিল। তবে নির্মাণ শেষে কতো ব্যয় হয়েছে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায়নি।

খালিজ টাইমসের প্রতিবেদনে এমনটা জানা গেছে, পার্কে প্রবেশে কোনো ধরনের ফি দিতে হবে না। ইসলাম ধর্ম ছাড়াও অন্যান্য ধর্মানুসারী ও সংস্কৃতির মানুষদের কাছে কোরআনের সৌন্দর্য ও অলৌকিকতা উপস্থাপনের জন্যই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

দুবাইয়ের আল খাওয়ানিজ অঞ্চলের ৬০ হেক্টর ও ৬ হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে এ পার্ক বিস্তৃত। কোরআনে যেসব গাছ-গাছালি ও জীব-বৈচিত্র্যের কথা উল্লেখ আছে, তার সবই পার্কটিতে রয়েছে। কোরআনে বর্ণিত অলৌকিক ঘটনাবলির চিত্রায়নও করেছে চিত্তাকর্ষকভাবে।

দুবাই মিউনিসিপ্যালিটির মহাপরিচালক দাউদ আবদুর রহমান আল-হাজিরি বলেন, প্রকল্পটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো কাচের হাউস। এটির অভ্যন্তরে কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত উদ্ভিদগুলো রয়েছে। এসব উদ্ভিদ বিশেষ তাপমাত্রা এবং পরিবেশগত বিশেষ নির্ণায়ক যন্ত্রের অধীনে বেড়ে ওঠবে। পাশাপাশি এতে কোরআনে উল্লিখিত বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদও স্থান পেয়েছে।

তিনি আরো বলেন, পবিত্র কোরআনে মোট ৫৪টি উদ্ভিদের কথা বর্ণিত হয়েছে। কোরআন পার্কে ১৫টি উদ্ভিদের বাগান রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ডুমুর, ডালিম, জলপাই, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রশুন, মসুর, যব, গম, আদা, কুমড়া, তেঁতুল, কলা, শসা ইত্যাদি। এসব উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক ও ঔষধি উপকারিতা এবং ব্যবহার সম্পর্কে চমৎকার আয়োজন রয়েছে। উদ্ভিদগুলোর মধ্যে যেগুলো পাওয়া যাবে, তা পার্কে রাখা হবে। অন্যান্য উদ্ভিদ লাগানো হবে বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট বাগানে। এছাড়াও পার্কটিতে সৌর প্যানেল, ওয়াই-ফাই সিস্টেম, ফোনের চার্জিং স্টেশন এবং দর্শকদের জন্য ছায়াযুক্ত আসন রয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চিকিৎসা ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কোরআনে উল্লেখিত সব অলৌকিক বিষয়ের অর্থ ও ব্যাখ্যা জানার জন্য ‘কোরআন পার্ক’ একটি দারুণ মাধ্যম হবে। এখানে গাছ ও বৃক্ষের উপকারিতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং বিজ্ঞানের এত উন্নতির পরও কোরআনের উল্লিখিত বৃক্ষের প্রতি তারা কত বেশি নির্ভরশীল তা বলা হয়েছে।

কোরআন পার্কের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে এতে দৃষ্টিনন্দন ফটক, প্রশাসনিক ভবন, বাগান, শিশু কর্নার, আউটডোর থিয়েটার, ঝরনা, গ্লাস বিল্ডিং, মরূদ্যান, লেক, রানিং ট্রেক, সাইকেল ট্রেকসহ নানা ধরনের স্থাপনা ও আয়োজন।

কোরআন পার্কের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
এছাড়াও পার্কটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হচ্ছে ‘অলৌকিক গুহা’। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত গুহার আদলে এটি সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তবে দক্ষিণ স্পেনের ‘আল-আন্দালুস’ বাগানের রূপ-শৈলীতে নির্মাণ করা হয়েছে হবে। দর্শনার্থীরা এই গুহায় পবিত্র কোরআনের অলৌকিক ঘটনাবলীর সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। এতে পবিত্র কোরআনের অলৌকিক বিষয়গুলো প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে।

কোরআন পার্কের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
২০১৩ সালে নির্মাণকাজ শুরু হওয়া ‘কোরআন পার্ক’র গুহা ও গ্লাস হাউস নির্মাণের জন্য প্রায় ২৮ মিলিয়ন ডলার বাজেট অনুমোদন করা হয়েছিল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here