মিরসরাই প্রতিনিধি
কৃষি কাজের আয় দিয়ে চলে সংসার। ছেলে মেয়ের ভরণপোষনেই টানাপোড়নে চলছিলো তার সংসারের চাকা। দুটি মেয়েকে এসএসসি আর এইসএসসি পড়িয়ে দিয়েছেন বিয়ে। আর একমাত্র ছেলেটি দশম শ্রেণীতে পড়ছেন। এর মাঝে বড় মেয়েটির দেখা দেয় মানসিক সমস্যা। ফলে ঠাই হয় আবারও বাবার ঘরে। সাদ্ধ মত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বাবা। কিন্তু এরই মাঝে দেখা দেয় স্ত্রীর মরণব্যাধী ক্যান্সার।
বলছিলাম মিরসরাই উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের মধ্য মায়ানী গ্রামের চকিদারবাড়ির নুর ইসলামের স্ত্রী হাসনা বেগমের কথা।
দু’বছর আগে হালকা আঘাত পেয়েছিলেন পায়ের হাটুতে। চিকিৎসা করিয়েছেন চট্টগ্রাম, মিরসরাই, সীতাকুণ্ড, ফেনীসহ একের পর এক বিভিন্ন হাসপাতালে। সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আলী আসগর চৌধুরীর কাছে চট্টগ্রামস্থ শেভরনে চিকিৎসা করান। তার চিকিৎসায় বিভিন্ন পরিক্ষা নিরিক্ষায় ধরা পড়ে মরণব্যাধি ক্যানসার। তিনি এই মরণব্যাধী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে অচল হয়ে পড়েন। কারো সহযোগিতা ছাড়া নিজে একা হাটতে কিংবা উঠতে পারেন না।
এমতাবস্থায় ডাক্তার বলেছেন ইমার্জেন্সি অপারেশন করা লাগবে। আর তাতে ব্যয় হবে প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে একটি পরিবারকে যে বিষয়ে সবচাইতে বেশি সংগ্রাম করতে হয়, সেটি হলো – অর্থের যোগান।
কিন্তু নুন আনতে পান্তা পূরায় তার পরিবারে এই খরছ বহন করার মতো অবস্থা নেই। তাই জীবনে কারো কাছে হাত না পাতানো মানুষটি আজ সবার দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন স্ত্রীর চিকিৎসার খরছ জোগাড়ে। কেউ বা দিচ্ছেন আবার কেউ আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু ডাক্তার বলছেন ইমার্জেন্সি অপারেশনের কথা।
স্ত্রীর চিকিৎসার খরছ জোগাড়ে বিক্রি করেছেন বিবাহিত মেয়ের গয়না। সে টাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলেও বর্তমানে অবশিষ্ট কোন টাকা নেই। দার করেছেন প্রায় লাখ টাকা। প্রতি সপ্তাহে একটি কেমোথেরাপির খরছ হচ্ছে ৩০ হাজার টাকা।
স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ছুটছেন এদিক ওদিক স্বামী নুর ইসলাম। কপালে চিন্তার ভাজ! অসুস্থ স্ত্রীর মতোই তাকেও যেন অসুস্থই দেখাচ্ছে। তিনি বলেন, দু বছর আগে যখন স্ত্রী হাসনা বেগম পায়ে সামান্য আগাত পেয়েছিলেন। চলছিল বিভিন্ন চিকিৎসাও। কিন্তু কোন ভাবেই তা সুস্থ করা সম্ভব হচ্ছিলো না। সর্বশেষ চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার পায়ে ক্যান্সার ধরা পড়ে। খবরটি শুনে যেন আকাশ ভেঙে পড়লো। পরিবারে যেন এক দুর্যোগ নেমে এলো।
এসব কথা বলতে গিয়ে যেন গলা শুকিয়ে গিয়েছিলো এই মানুষটির। তিনি বলছেন, স্ত্রীর ক্যান্সার হওয়ার পর থেকে তার পরিবারের বাকি সব কিছুই যেন থমকে গেছে।
নুর ইসলাম তার স্ত্রীকে বাচাঁতে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন। মানুষ মানুষের জন্য। তাই বৃত্তবানরা এগিয়ে আসলে হতদরিদ্র নুর ইসলামের স্ত্রীকে বাচাঁনো সম্ভব।
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানাঃ- (বিকাশ পার্সোনাল, স্বামী নুর ইসলাম। 01631682841