চট্টগ্রাম থেকে হাতানো টাকায় যমুনা অয়েল কর্তার বিপুল সম্পদ ঢাকায়

187

 

চট্টগ্রামের যমুনা অয়েলে কর্মরত ছিলেন তিনি। এখানে বসে অবৈধভাবে যে টাকা তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন, সেই টাকায় ঢাকায় গড়েছেন বিপুল সম্পদ। রাজধানীর অভিজাত এলাকায় কিনেছেন একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। তার হাতে থাকা নগদ টাকার পরিমাণও অনেক বলে যমুনা অয়েলের ভেতরে কানাকানি আছে। চট্টগ্রামে থাকাকালে জাহাজের ৭ কোটি লিটার তেল চুরির ঘটনায় তাকে ঢাকায় বদলি করা হলেও সেখানেও তিনি আগের সেই কাজেই ব্যস্ত।

বর্তমানে যমুনা অয়েলের ঢাকা অফিসে কর্মরত এজিএম (কেমিক্যাল) আবদুল্লাহ রশিদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত বিপুল সম্পদ অর্জন এবং নগদ অর্থের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকে আসা অভিযোগ থেকে জানা যায়, আবদুল্লাহ রশিদ অবৈধ অর্থে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন। ২০১৭ সালে চট্টগ্রামে যমুনা অয়েলে দায়িত্ব পালনকালে চাঁদপুরের ইরাবতি জাহাজ থেকে ৭ কোটি লিটার তেল চুরির ঘটনায় তাকে ঢাকায় শাস্তিমূলক বদলি করার। তদন্ত প্রতিবেদনে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশও করা হয়। কিন্তু সবকিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিনি ঢাকায়ও সেই আগের কাজেই ব্যস্ত রয়েছেন।

যমুনা অয়েলে তেল চুরি করে অনেক কর্মকর্তাই কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। দুদকে যাওয়া অভিযোগ থেকে জানা যায়, এদেরই একজন আবদুল্লাহ রশিদ। বর্তমানে যমুনা অয়েলের ঢাকা অফিসে এজিএম কেমিক্যাল হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। এর আগে ২০১৭ সালে চট্টগ্রামের প্রধান কার্যালয়ে ছিলেন এজিএম ডিপো অপারেশনের দায়িত্বে। ওই সময় তেলচোর সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত থেকে বিপুল অর্থ লুটে নেওয়ার প্রমাণ মেলায় তাকে বদলি করা হয় ঢাকায়। চট্টগ্রামের ওই ঘটনায় আবদুল্লাহ রশিদের সহযোগী ডিপো সুপারিনটেনডেন্ট খাদেমুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ধানমন্ডি ৬ নম্বর রোডের ৩৫ নম্বার বাড়িতে রয়েছে আবদুল্লাহ রশিদের একটি অত্যাধুনিক ফ্ল্যাট। সেখানেই তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করেন। ধানমন্ডি-২ এর ৫০ নম্বরে একটি নির্মাণাধীন ভবনে প্রায় ৬ কোটি টাকায় কেনা আরও একটি ফ্ল্যাটের খোঁজও মিলেছে। অন্যদিকে জানা গেছে, লালমাটিয়ার ‘ই’ ব্লকে ৩/১৩ প্লটের তৃতীয় তলার সি-২ ফ্ল্যাটটিও এই আবদুল্লাহ রশিদের। এছাড়া উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ৭ নম্বর রোডের ২৪/২৬ মুনসুন ভবনে এফ-৪/সি ফ্ল্যাটটির মালিকও তার— পাওয়া গেছে এমন তথ্যও।

এ বিষয়ে পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান সামছুর রহমান জানিয়েছেন, দুর্নীতির নানা অভিযোগে আবদুল্লাহ রশিদকে এরই মধ্যে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

চেয়ারম্যান ‘অব্যাহতির’ কথা জানালেও আবদুল্লাহ রশিদ ঠিকই এখনও অফিস করে যাচ্ছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here