
শাহবাগে শামীম আহমেদ নামে এক ফুল ব্যবসায়ীর কাছে বখশিশ (চাঁদা) চেয়ে না পেয়ে তাকে ‘বিএনপি কর্মী’ আখ্যা দিয়ে মারধর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রলীগের এক নেতা। আজ বুধবার বিকেল চারটার দিকে শাহবাগ ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার শামীম শাহবাগ বটতলা ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক। ছাত্রলীগের ওই নেতার নাম জুয়েল মোল্লা। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নাট্য ও বিতর্ক সম্পাদক।
ফুল ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা জানান, ঈদুল আজহার আগে বখশিশ হিসেবে সমিতির কাছে চাঁদা দাবি করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নাট্য ও বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক জুয়েল মোল্লা। সেসময় চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ। তবে তিনি ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচীর ফুল বিনামূল্যে দেওয়ার সম্মতি দেন।
গত ১৫ আগস্ট শোক দিবসে ছাত্রলীগের কর্মসূচীর জন্য দুটি ‘ফুলের ডালা’ বিনামূল্যে নিয়ে যান জুয়েল। তারপরও বিভিন্ন সময় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চাঁদা দাবি করতেন তিনি।
আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কামাল মিয়াকে চাঁদার জন্য ফোন করেন জুয়েল। তাকে ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে আসতে বলেন কামাল। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক বায়েজীদ কোতোয়ালসহ ছয়জন নেতাকর্মী নিয়ে সমিতির অফিসে আসেন ছাত্রলীদের এই নেতা।
এ সময় চাঁদার ব্যাপারে কথাবার্তায় এক পর্যায়ে সমিতির সম্পাদক শামীম আহমেদকে বিএনপি কর্মী আখ্যা দেন জুয়েল। শুধু তাই নয়, বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচীতে বিনামূল্যে ফুল দেওয়ার অভিযোগ তোলেন শামীমের বিরুদ্ধে। কিন্তু তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করলে তাকে চড় দেন জুয়েল। পরে তার সঙ্গে আসা ছাত্রলীগের অন্যান্য কর্মীরা শামীমকে মারধর শুরু করেন। উপস্থিত ছয় জনের মধ্যে চারজন শামীমকে পেটান।
শামীম আহমেদ বলেন, ‘ঈদের আগে থেকেই চাঁদার জন্য ফোন দিতেন জুয়েল। কিন্তু তাকে ব্যবসার অবস্থা ভালো না বলে চাঁদা দিতে অস্বীকার করি। তিনি আমাকে ও সমিতির সভাপতিকে মাঝেমধ্যেই ফোন দিতেন। সর্বশেষ বুধবার বিকেলে এসে আমি নাকি বিএনপি করি বলে আমাকে মারধর করেন।’
তবে এ বিষয়ে ছাত্রলীগের নাট্য ও বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক জুয়েল মোল্লা বলেন, ‘চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। আমি খবর পেয়েছি শামীম বিএনপি করে। একইসঙ্গে কয়েকটা দোকান আছে যারা বিএনপি-জামায়াতের প্রোগ্রামগুলোতে ফুল দেয়। আর্থিকভাবে সহযোগীতা করে, আমাদের কাছে প্রমাণ আছে। আমরা শাহবাগে যাই, তারা ইনফরমেশনগুলো পাচার করে। এগুলো আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় বিষয়, দলের ভেতরের খবর যদি বাইরে চলে যায়। ব্যাপারটি গুরুত্বসহকারে নিয়ে আমি তাদের ফোন দিয়ে আজ যাই। আমি এসে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়েছি। মারধর করি নাই।’
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত শাহাবাগ থানায় কোনো মামলা বা অভিযোগ হয়নি।
সূত্রঃ আমাদের সময়
