
নিজস্ব প্রতিবেদক
‘বিএনপির সমাবেশের উপস্থিতি প্রমাণ করে বিএনপির জনপ্রিয়তা কমেছে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের উত্তরে নীরব হাসি ছাড়া আর কিইবা বলতে পারি। আসলে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকা, বিপুল পরিমাণ চাঁদাবাজির টাকা খরচ করেও সমাবেশে মানুষ আনতে পারেন না, আবার কিছু লোক এলেও ধরে রাখতে পারেন না ক্ষমতাসীন নেতারা, পথে পথে সরকারি আক্রমণ আর বাধার মুখেও এত বিপুল মানুষের বিএনপির সমাবেশ দেখে তারা হতাশ হয়ে মনের বিকারে প্রলাপ বকছেন।
আজ সোমবার সকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, একতরফাভাবে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে আওয়ামী নেতারা কত তামাশা দেখাচ্ছেন, আর কত যে উদ্ভট কথা বলছেন তার শেষ নেই। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের এখন হতভাগ্য দেউলিয়াগ্রস্ত রাজনীতি। সেজন্যই খাপছাড়া কথা বলছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। জনসভায় বিপুল সমাগম দেখে সরকারের কাঁপুনি ধরে গেছে, সেজন্যই বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে ব্যাপকহারে গ্রেফতারকে সরকার রক্ষাকবচ মনে করছে। গতকাল জনসভা শেষে আমরা দেখলাম, বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঔদ্ধত্য আক্রমণে গ্রেফতার করার মহড়া।
রিজভী বলেন, গতকাল বিএনপির জনসভা মহাসাগরে পরিণত হয়। চারিদিক থেকে ধেয়ে আসা জন¯্রােতে সোহরাওয়ার্দীর বিশাল প্রান্তরকে কানায় কানায় পরিপূর্ণ করে। রমনা পার্কসহ আশেপাশের রাস্তাঘাট, মোড় ও ফুটপাত মিটিং শুনতে আসা মানুষে ঠাসা ছিল। শাহবাগ, কাকরাইল, মৎস্যভবন এলাকাসহ সংলগ্ন এলাকাগুলোতে ছিল উর্মীমালার মতো জনতার ঢেউ। তিল ধারণের ঠাঁই নেই। মিছিলে মিছিলে কেঁপেছে ইট, পাথর কংক্রীটের রাজপথ। জনসভার আঙ্গিক বিস্তৃত হয়ে স্মরণকালের মহাসমাবেশে পরিণত হয়।
তিনি বলেন, গতকাল দুপুর থেকে জনসভাস্থলে আসা শুরু হয় মিছিলের প্রবাহ। দাবদাহ পীড়িত, পিপাসার্ত মানুষ নিজেদের কষ্টকে প্রশ্রয় না দিয়ে দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য বুকের মধ্যে চলকে ওঠা আবেগ নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে জনজোয়ারে পরিণত করে। তারা যেন ‘এদেশ কাড়তে যেই আসুক/আমরা সাহসে বেঁধেছি বুক/আমরা নইকো ভীরুর জাত/দেবো নাকো হতে দেশ বেহাত’ এই অভয় মন্ত্র বুকের মধ্যে ধারণ করে ছুটে আসে জনসভাস্থলে।
তিনি বলেন, গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসভা ঘিরে ঢাকার ভিতরে ও আশেপাশের বিভিন্ন পয়েন্টে গণপরিবহন বন্ধ করে দেয় ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র নেতাকর্মীরা। বিএনপি নেতাকর্মীদের সন্দেহ করে পথে পথে বাধা দিয়েছে তারা। মারধরের ঘটনাও ঘটেছে বিভিন্ন স্থানে। সকাল থেকেই ঢাকা মহানগরীর প্রবেশ পথ আগলে রাখে পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী ক্যাডাররা। গত শনিবার রাত থেকেই ঢাকা মহানগরীসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় চলে পুলিশী তল্লাশী। গতকাল ভোরেই আওয়ামী ক্যাডাররা বাস কাউন্টার থেকে কর্মচারী ও গাড়ি সরিয়ে দিয়ে সারাদিন বাস সার্ভিস বন্ধ রাখে। ঢাকা মহানগরীর নিকটবর্তী ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও পূর্বাচলে ৩০০ ফিট মহাসড়কে পুলিশের প্রটেকশনে দিনমান চলে আওয়ামী ক্যাডারদের মোটরসাইকেল মহড়া। বিএনপির লোক সন্দেহে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
