পরিবহন শ্রমিকদের ৪৮ ঘন্টার অবরোধে অচল হয়ে পড়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক

219

::মিরসরাই প্রতিনিধি::

রোববার (২৮ অক্টােবর) সকাল থেকেই চলছেনা চার চাকার যানবাহন। সাপ্তাহিক ছুটি শেষে সরকারি-বেসরকারি চাকজীবীরা চট্টগ্রাম শহরে আসার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা বিভিন্ন জায়গায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করে কোন গাড়ি না পাওয়ায় অনেকে বাড়িতে ফিরে গেছে।

উপজেলা কেন্দ্রীক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরীজীবিদের পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে। তবে ভাড়া গুনতে হয়েছে তিন থেকে চার গুন বেশি।

সরকারি চাকরিজীবী রাশেদুল হাসান জানান, সকাল ৮ টা থেকে মিঠাছরা বাইপাসে গাড়ির জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। দশটা পর্যন্ত গণপরিবহনের কোন বাস চোখে পড়েনি। দূরপাল্লার কয়েকটি বাস চট্টগ্রাম অভিমুখে চললে ও সেগুলো স্থানীয় যাত্রীদের বহন করেনি।

রাশেদুল হাসান জানান, সকাল দশটার পর থেকে চারবার গাড়ি পরিবর্তন করে দুপুর সাড়ে বারটায় এ কে খান পর্যন্ত পৌঁছি। এ কে খান এসেও পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। যেখানে একশ টাকায় মিঠাছরা থেকে আগ্রাবাদ পৌঁছানো যায় সেখানে আজ চট্টগ্রাম আসতে খরচ হয়েছে সাড়ে তিনশ টাকা।

চট্টগ্রাম অভিমুখী একাধিক চাকরিজীবী এবং শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সারাদেশে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কারণে চট্টগ্রামে ধর্মঘট কিছুটা শিথিল হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলো শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সেই ভরসায় অনেকেই সকালে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্য রওনা দেয়ার সিন্ধান্ত নেন। কিন্তু রাস্তায় এসে দেখেন পরিস্থিত উল্টাে। মহাসড়কে গণপরিবহন বন্ধ থাকার সুযোগে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, টেম্পু এবং হিউম্যান হলারগুলো তিন থেকে চারগুন ভাড়া নিচ্ছে। যাত্রীরা বাধ্য হয়ে এসব গাড়িতে করে গন্তব‌্যে আসেন।

সরেজমিনে গিয়ে বারইয়ারহাট বাসষ্ট্যান্ডে দেখা গেছে, সকাল থেকে কোন ধরনের বাস ছেড়ে যায়নি। দুএকটি গাড়ি উত্তর দিক চট্টগ্রামের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে শ্রমিকদের বাঁধার কারণে গাড়ি বন্ধ করে দিকে বাধ্য হয়।

নিজামপুরে দাঁড়িয়ে থাকা এক যাত্রী বলেন, এর আগে অনেক ধর্মধট দেখেছি। আজকের মতো এমন কঠিন ধর্মঘট আগে দেখিনি। সড়ক একেবারেই ফাঁকা। তিনি সীতাকুণ্ড থেকে চারবার হিউম্যান হলার পরিবর্তন করে নিজামপুর পর্যন্ত এসেছেন। কিছু পথ পায়ে হেটেছেন। গন্তব্য জোরারগঞ্জে কবে নাগাদ পৌঁছাতে পারবেন সেই দুঃশ্চিন্তায় আছেন।

প্রাইভেট কার চালক রফিক উদ্দিন বলেন, যাত্রীদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে অনেক ভয়ে ভয়ে বারইয়ারহাট থেকে যাত্রী নিয়ে এসেছি। ভাটিয়ারি থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার সাহস পাচ্ছি না। অতিরিক্ত ভাড়া কেন নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাত্রীরাতো আপত্তি করছে না। গন্তব্যে যেতে পারছেন এতেই তারা খুশি।

মিরসরাইয়ের দূরপাল্লার বিভিন্ন বাস কাউন্টারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আজ ( রবিবার) সকাল থেকে দূরপাল্লার কোন বাস চট্টগ্রাম থেকে চলাচল করছে না। ৪৮ ঘন্টার টানা পরিবহন ধর্মঘট চলার কারণে বন্ধ আছে দূরপাল্লার বাসগুলো। এদিকে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্যবাহী কোন ট্রাক, লরিও চলাচল করতে দেখা যায়নি।

জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ সোহেল সরকার বলেন, শ্রমিক সংগঠনের ডাকে অবরোধে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমার টিম দায়িত্ব পালন করছেন। মহাসড়কের মিঠাছড়া, জোরারগঞ্জ, সোনাপাহাড়, ও বারইয়ারহাটে দায়িত্ব পালন করেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here