Friday, 7 November 2025

[acf field="title_top"]

বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে

[acf field="title_bottom"]

প্রকাশিত :

[acf field="reporter_name"]

[photo_card_and_fontsize]

[custom_ad id="2"]

প্রকৃতির নৈসর্গিক শোভা, বিস্তৃত বালুকাময় প্রান্তর ও সারি সারি ঝাউ বাগানের মনমাতানো সবুজের সমারোহসহ আপন সৌন্দর্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এ সৈকতের ছবি ছড়িয়ে পড়ায় স্বল্প সময়ে এটি দেশব্যাপী পরিচিত হয়ে উঠে। সরকারি বন্ধের দিনসহ প্রতিনিয়ত এ সমুদ্র সৈকতে দল বেঁধে ও পরিবার পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসেন দূর–দূরান্তের দর্শনার্থীরা। এতে আগত হাজারো দর্শনার্থীর কোলাহলে মুখর হয়ে উঠে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত।

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রাম শহর থেকে ২৫কিলোমিটার উত্তরে বাঁশবাড়িয়া বাজার। এই বাজারের মধ্যে দিয়ে সরু পিচ ঢালা পথে মাত্র ১৫ মিনিটে পৌঁছানো যায় বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র উপকূলে। এই সমুদ্র সৈকতের মূল আকর্ষণ হল– প্রায় আধা কিলোমিটারের বেশি সমুদ্রের বালুচর, সমুদ্রের মতই বড় বড় ঢেউ। সূর্যাস্তের অপার সৌন্দর্য ও সাগরের জলরাশির মন ছুঁয়ে যাওয়া ঢেউ এর দোলা মন কাড়ছে দর্শনার্থীদের। এছাড়া ঝাউ বাগানের সারি সারি ঝাউ গাছ সব মিলিয়ে এ এক অপূর্ব সৌন্দর্য অপেক্ষা করছে দর্শনার্থীদের জন্য।

সম্ভাবনাময় এ সমুদ্র সৈকতটি নিজ গুণে দর্শনার্থী ও পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হলেও সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে পরপর দুটি দুর্ঘটনায় ৫জনের মৃত্যুতে কিছুটা আতংকে রয়েছেন আগন্তুকরা। এ ব্যাপারে প্রশাসনিকভাবে সাগরে নামতে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি দর্শনার্থীকে সতর্ক করতে লাল পতাকা লাগানো হয়েছে। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মোহে দর্শনার্থী এখানে এলেও নিরাপত্তা নিশ্চিতে গাফিলতিতে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে বলে জানান প্রশাসন। শুরুতে এ সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা পানিতে গোসল করতে নামলেও কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান সাগর থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখানে আসা দর্শনার্থীরা তাদের তৈরি চোরা বালির গর্তে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে।

সমুদ্র সৈকতে পরিবার নিয়ে আসা ভাটিয়ারী ইমাম নগরের মোঃ মামুনুর রশিদ জানান, ভাটিয়ারী লেক ও পাহাড়ের চেয়ে অনেক বেশি আকর্ষণীয় বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য। সমুদ্রের জলরাশির আছড়ে পড়া ঢেউ আর পড়ন্ত বিকালের শেষে সূর্যান্তের অপরূপ দৃশ্য মুহূর্তেই মন কাড়ে দর্শনার্থীদের। তিনি আরো জানান, ঠিক কক্সবাজারের মত অতি দীর্ঘ না হলেও এখানেও রয়েছে সারি সারি ঝাউবন আর বালু চর। একই ভাবে সূর্যোদয় কিংবা সূর্যাস্তের আবির রঙের সমুদ্র এখান থেকেও দেখা যায়। তাই এখানে এসে তার ভালোই লাগছে।

স্থানীয় বাসিন্দা জাফর আলমের অভিযোগ, সৈকত থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে। কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে সমুদ্রের বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে সৈকতে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়ে একেকটি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। জোয়ার এলে এসব গর্ত পানিতে তলিয়ে যায়। এসব গর্তে পড়েই দর্শনার্থীরা মারা যাচ্ছেন। এর আগের প্রায় সবকটি ঘটনা একই স্থানে ঘটেছে– বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

গত বছর থেকে এ সৈকতে দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এম এ কাসেম(রাজা) নামে এক ব্যক্তি সৈকতকে আরো আকর্ষণীয় করার লক্ষ্যে দর্শনার্থীদের একটি বাঁশের সেতু তৈরি করে। এছাড়া তাঁরই অর্থায়নে সৈকতের বালুর চরের মধ্যে ছোট ছোট ১৫/২০ দোকান এবং বসার জন্য চেয়ার–টেবিলসহ ১০/১২টি ছাতা বানিয়ে দেন। তবে এম এ কাসেম রাজা সৈকতের সঙ্গে তার কোনো রকম সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি একজন সমাজ সেবক। সৈকতের পাশেই আমার তত্ত্বাবধানে কাছিয়া–সন্দ্বীপ ঘাট পরিচালিত হয়। এখানে পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য আমি কিছু কাজ করেছি। এমনকি সৈকতের সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় ঝাউগাছ লাগিয়েছি।

বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী জাহাঙ্গীর বলেন, এ সৈকতকে নিয়ে এম এ কাসেম নামে এক শিল্পপতি ব্যবসা শুরু করেছেন। সৈকতে প্রতিদিন ৫–৬ হাজার লোক আসে। এতে তার প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা আয় হয়। ঈদ বা জাতীয় উৎসবে বন্ধের দিনে ১৪–১৫ হাজারেরও বেশি দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। এ সময় অর্ধ কোটি টাকারও বেশি আয় হয়। কিন্তু সৈকতের নিরাপত্তায় তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। সৈকতের বিপজ্জনক এলাকায় তিনি কোনো রকম লাল সংকেত ব্যবহার করেননি। এ সৈকতে নেই কোনো নিরাপত্তা প্রহরী। নিখোঁজদের খুঁজতে কোনো রকম বয়া বা স্পিডবোট তিনি রাখেননি। ফলে দর্শনার্থীরা সাগরে গোসল করতে নেমে অজ্ঞতাবশত বিপজ্জনক এলাকায় গেলে আর খুঁজে পাওয়া যায় না।

সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. ওয়াছির আজাদ জানান, সমুদ্র সৈকতটি সম্পূর্ণ অরক্ষিত। এ সৈকতের গভীরতা ও প্রাকৃতিক পরিবেশ সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা নেই কারোই। ফলে এ সৈকতে গোসল করতে নামা দর্শনার্থীদের জন্য সত্যিই বিপজ্জনক। সে হিসেবে এই সৈকতে না যাওয়াই নিরাপদ।

সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুজ্জামান বলেন, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকতে আমরা লাল পতাকা টাঙিয়ে দিয়েছি, যাতে আর কোনো পর্যটক এখানে এসে সাগরে না নামে। এটি সরকারের অনুমোদন দেওয়া কোনো বৈধ বিচ ছিল না। তাই এখানে কোনো নিরাপত্তার ব্যবস্থাও সরকারিভাবে করা সম্ভব নয়। তিনি আরো বলেন, এই বিচসংলগ্ন সন্দ্বীপ ঘাটের ইজারাদার এম এ কাসেম রাজা যেভাবে সি–বিচে অবৈধ দোকানপাট ও স্থাপনা নির্মাণ করেছেন তাও আমরা তুলে দিয়েছি। এগুলোরও কোনো বৈধতা নেই। কেউ সরকারি সম্পদ সাগরপাড়ে ব্যক্তিগত স্থাপনা করে নিজেকে মালিক দাবি করতে পারে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তারিকুল আলম জানান, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তবে পর্যটনটির কোন বৈধতা নেই। নিরাপত্তার জন্য জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী লাল পতাকা ও সাইনবোর্ড লাগানো হয়। কিন্তু আগত দর্শনার্থী ও পর্যটককে সাগরে না নামার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলেও তারা তা অমান্য করে সাগরে নামেন। যার কারণে চোরাবালির মধ্যে তলিয়ে গিয়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াছ হোসেন বলেন, সমুদ্র সৈকতটি সম্পূর্ণ অবৈধ। তাই এটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সৈকতে যাতে কোনো পর্যটক প্রবেশ করতে না পারে তা তদারক করার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কেউ যদি এ সৈকত পরিচালনা করতে চায় তাহলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।

সর্বশেষ

মিরসরাইয়ে যুবদল নেতা আবু ছায়েদের উপর হামলা

  মিরসরাই প্রতিনিধি মিরসরাইয়ে আবু ছায়েদ নামে এক যুবদল নেতার উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৫...

নির্বাচনকে ঘিরে মিরসরাইয়ে বিএনপির উঠান বৈঠক

  নিজস্ব প্রতিনিধি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মিরসরাইয়ে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার...

মিরসরাইয়ের হিঙ্গুলীতে বিএনপি নেতার উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

মিরসরাই প্রতিনিধি: মিরসরাই উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ...

মিরসরাইয়ে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত শীর্ষক ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ

মিরসরাই প্রতিনিধি মিরসরাইয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত’ শীর্ষক ৩১ দফা...

আরও পড়ুন

‘গ্রামীণ জনপদের মুখপাত্র চলমান মিরসরাই’

মিরসরাই প্রতিনিধি ‘চলমান মিরসরাই গ্রামীণ জনপদের মুখপাত্র। উপজেলা থেকে ধারাবাহিক ভাবে একটি পত্রিকা ২০ বছর...

মিরসরাইয়ে শহীদ মুজাহিদ স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন

  মিরসরাই প্রতিনিধি মিরসরাইয়ে শহীদ মুজাহিদ স্মৃতি আন্তঃওয়ার্ড ফুটবল টুর্নামেন্টে উদ্বোধন হয়েছে। বুধবার ( ২৫ ডিসেম্বর)...

সুমন সভাপতি, ইমতিয়াজ সম্পাদক-রক্তিম ক্লাব করেরহাট এর কমিটি গঠন

  মিরসরাই প্রতিনিধি মিরসরাই উপজেলার অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘রক্তিম ক্লাব-করেরহাট’ এর কার্যকরী পরিষদ গঠন করা হয়েছে।...