বিতর্কের মুখে বদলে গেল বাংলাদেশের বিশ্বকাপ জার্সি

564

কারো দাবি আয়ারল্যান্ডের জার্সি, কেউ বা বলছে কেনিয়া। তবে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছিল পাকিস্তানের জার্সির সঙ্গে মিলে যায় বলে। বাংলাদেশ দলের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের অফিসিয়াল জার্সি প্রকাশের পর থেকে ক্রিকেটের ভক্তরা সেটি নিজেদের বলে মেনেই নিতে পারছিলেন না। শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। কারণ গাঢ় সবুজে নেই লালের আভা। যা দেশের পরিচয় ও ঐতিহ্য ও গৌরব বহন করে। তোপের মুখে অবশেষে গতকাল জার্সি বদলের কথা নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। আর সবুজের মধ্যে লাল রং না থাকার জন্য দায়ী করেছেন আন্তুর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলকে (আইসিসি)।

মঙ্গলবার বিকেলে জরুরী এক সংবাদ সম্মেলনে পাপন বলেন, ‘কালকেই (সোমবার) আকরামের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল যে, আমরা নতুন ডিজাইন চাই। তখন আমাদের এটি (নতুন জার্সি) ডিজাইন করা হয়। আগের যে লালটি ছিল তার রিভার্স। আর ট্রাউজারেও লাল স্ট্রাইপ থাকবে। এটি হলো বেসিক। সুতরাং এখানে দ্বিধান্বিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটি ইচ্ছা করলে আমরা এখনই পরিবর্তন করতে পারবো।’

ডিজাইন পরিবর্তনের জন্য আইসিসিকে দায়ী করে বিসিবি সভাপতি পাপন বলেন, ‘ওখান থেকে আইসিসির জন্যই আমরা ওদের নির্দেশে সাদাটা সরিয়েছি। সাদাটা সরানোর পর যে কোনও জায়গায় লাল থাকছে না সেটাই হলো ইস্যু। আর আমরা যখন মাঠে জার্সি উদ্বোধন করতে যাই তখন কিন্তু আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে আমি জার্সিটি দেখেছি কিনা। আমি তখন পরিষ্কারভাবে বলেছি যে না আমি দেখিনি। তখন প্রশ্ন করা হয়, কে দেখলো? আমি বলেছি হয়তো বা ক্রিকেটাররা। আসলে আমিও দেখিনি, মাশরাফিও দেখেনি। কোন খেলোয়াড়ই দেখেনি।’

জার্সিতে এমন ভুলের নেপথ্যের কারণ হিসেবে পাপন বলেন, ‘এখানে যে ঘটনাটি হয়েছে সেটি আপনাদের বলছি। আমাদের যে কমিটি আছে তারা জার্সিগুলো বাছাই করে পাঠিয়ে দেয় আইসিসিতে। প্রথম যে জার্সিটি পাঠানো হয় সেটির ছবি আপনারা দেখছেন। এই একই সবুজটি। শুধু সাদার জায়গায় লাল লেখা ছিল। নাম, বাংলাদেশ লিখাটা এবং পিছনের নম্বরটি ছিল লাল। ওরা তখন বললো যে, তোমাদের আরেকটি বিকল্প জার্সিও দিতে হবে। তখন এটার সঙ্গে সঙ্গে আমরা লাল রঙেরটি পাঠাই। বিকল্প জার্সি সবসময় আইসিসি বিশ্বকাপে দিতে হয়। এগুলো তো আর এক মুহূর্তে বানানো হয়নি। এই দুটো আমরা যখন পাঠালাম তখন আইসিসি সঙ্গে সঙ্গে অনুমোদন দিয়েছে। দিয়ে বললো আমরা যে সবুজটি পাঠিয়েছিলাম সেই সবুজটির মধ্যে আমরা লাল লেখেছি দেশের নাম এবং নম্বর, এটা হবে না। লাল ব্যবহার করা যাবে না নাম এবং নম্বরে। এটি সাদা করতে হবে সবার জন্য।’

এছাড়াও অন্যদেশের জাতীয় পতাকার সঙ্গে জার্সির মিল নেই বলেও দাবি করেন বোর্ড সভাপতি। তিনি বলেন, ‘একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা আমি আপনাদের বলি সেটি হলো আরো কিছু ব্যাপার এসেছে। কেন এসেছে আমি জানি না। আপনারা হলেন স্পোর্টস রিপোর্টার, বিশেষ করে ক্রিকেটের সঙ্গে আপনারা অনেক দিন থেকেই জড়িত। প্রথম কথা হচ্ছে অন্যান্য দেশে জাতীয় পতাকার সঙ্গে জার্সির কোনো সম্পর্ক নেই। আপনি অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারতকে দেখেন কোথাও নেই। তবে আজকাল বলা হচ্ছে জাতীয় পতাকার কথা। আমাদের ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপের জার্সিতেও কিন্তু কোনো লাল ছিল না। সবুজের সঙ্গে হলুদ ছিল। এখানে কিন্তু জার্সির সঙ্গে জাতীয় পতাকার সম্পর্ক টেনে আনা আমার মনে হয় সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।’ অবশেষে জার্সি নিয়ে আপাতত বিতর্কের অবসান হতে যাচ্ছে বিসিবির ডিজাইন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়াতে। তবে প্রতিটি দেশের জার্সিতে আইসিসি কতোটা হস্তক্ষেপ করতে পারে সেটি নিয়েও আছে ক্রিকেট ভক্তদের নানা প্রশ্ন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here