এমন হার শেষ কবে দেখেছে ভারত? দেখলেও কয়েক দশক আগে। কিন্তু সাম্প্রতিক তুখোড় ফর্মে থাকা দলটি অ্যাডিলেডে এমনভাবে নাজেহাল হবে, তা কে ভেবেছিল। প্রথম ইনিংসে ২৪৪ রান করা ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬ রানে অলআউট। তখনই ম্যাচের গতি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল (প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ১৯১)। কারণ অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য দরকার ছিল তখন মাত্র ৯০ রান। সে লক্ষ্য দুই উইকেট হারিয়ে পৌছে যায় স্বাগতিকরা। ভারতের কপালে জোটে ৮ উইকেটের বিভীষিকাময় হার।
বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া জো বার্নসের ফিফটিতে সহজেই সেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। ম্যাথু ওয়েডের সাথে বার্নসের ৭০ রানের উদ্বোধনী জুটিতে জয়ের দুয়ারে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। ৫ চারে ৩৩ রান করা ওয়েডের রান আউটে ভাঙে শুরুর জুটি। মার্নাস লাবুশেনকে দ্রুত ফেরান রবিচন্দ্রন অশ্বিন। স্টিভেন স্মিথকে নিয়ে বাকিটা সহজেই সারেন বার্নস। ছক্কায় ম্যাচ শেষ করা এই ওপেনার ৬৩ বলে করেন ৫১ রান। ইনিংসে ৭ চারের পাশে ছক্কা ওই একটিই।
এর আগে শনিবার ম্যাচের তৃতীয় দিনের সকালটা ভারতের কাছে ছিল রীতিমতো ভয়াবহ। ১ উইকেটে ৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা ভারত এলোমেলো হয়ে যায় অজি পেসে তোপে। ভারতের কেউ করতে পারেনি দশের উপরের রান। সর্বোচ্চ ৯ রান আসে মায়াঙ্ক আগারওয়ালের ব্যাট থেকে। পারেননি পূজারা, কিংবা অধিনায়ক কোহলিও। মাত্র ঘণ্টাখানেক টিকতে পেরেছে সফরকারীরা। ১৫ রানেই ৫ উইকেট হারানোর পর দলটি আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ৩৬ রানে গুটিয়ে যায় ভারত।
নিজেদের ইতিহাসে ভারতের এটি সর্বনিম্ন স্কোর। আগেরটি ছিল ৪৪ বছর আগে লর্ডসে ৪২ রান, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। টেস্ট ইতিহাসে সব মিলিয়ে ভারতের এটি পঞ্চম সর্বনিম্ন স্কোর। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের আগের সর্বনিম্ন ছিল ১৯৪৭ সালে ব্রিজবেনে করা ৫৮।
ভারত শিবিরে স্টিমরোলার চাপানো ইনিংসে বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৫ উইকেট নেন হ্যাজলউড। চারটি উইকেট নেন প্যাট কামিন্স। প্রথম ইনিংসে ৭৩ রানের অপরাজিত ইনিংসের সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক টিম পেইন। আগামী ২৬ ডিসেম্বর ব্রিসবেনে শুরু হবে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্ট।