জাতীয় সংসদে মহাজোটের শরিক দলগুলোকে বিরোধী দলের আসনে বসানোর সরকারি দলের পরিকল্পনার কঠোর সমালোচনা করেছেন ১৪ দলের শরিক জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেছেন, ১৪ দলের ঐক্যের শক্তিতেই এবারের নির্বাচনেও মহাজোট বিজয়ী হয়েছি। কিন্তু এই ঐক্যকে আমরা কার্যকর রাখতে পারিনি। পরাজিত সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী শক্তির পুনরুত্থানের ফাঁকফোঁকর বন্ধে মহাজোট ও ১৪ দলের ঐক্যের বিকল্প নেই। তাই মহাজোট ও ১৪ দলকে টিকিয়ে রাখতে হবে। মহাজোট ও ১৪ দলকে অবহেলা করা হবে আত্মঘাতী। ফরমায়েসি বিরোধী দল তৈরি করে সংসদকে কার্যকর করা যাবে না।
বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে হাসানুল হক ইনু এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার চমৎকার সফলতা এনেছে। এই ১০ বছর শেখ হাসিনাকে ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশকে উঠিয়ে দাঁড় করানোর যুদ্ধ করতে হয়েছে। তাকে জঞ্জাল পরিষ্কারের যুদ্ধ, দেশকে এগিয়ে নেওয়ার যুদ্ধ এবং জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুদ্ধসহ পদে পদে যুদ্ধ করতে হয়েছে, বাঁধার মুখোমুখি হতে হয়েছে। এই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা চমৎকার সফলতা আনতে পেরেছি। কিন্তু এরপরও ক্ষেত্রবিশেষে কিছু ঘাটতি, কিছু দুর্বলতা আছে। যেমন দুনীতি ও দলবাজি। তেঁতুলতত্ত্বকে প্রশ্রয় দেওয়াটাও আত্মঘাতী। মাদককে যেমন ছাড় দেওয়া যায় না, তেঁতুলতত্ত্বকেও তেমনি ছাড় দেওয়া যায় না। এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে রাজাকার ও জঙ্গিচক্রের যাতে উত্থান না ঘটে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
উপজেলা নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে ইনু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির আকাশে রংধনু হবেন- সেটাই আমার প্রত্যাশা। আমি শয়তান নই, আমি ফেরেস্তা নই, আমি মানুষ। শেখ হাসিনার সরকার ফেরেস্তার সরকার নয়, শয়তানের সরকার নয়, মানুষের সরকার। দোষ হলে সমালোচনা করবেন, ভালো হলে প্রসংশা করবেন।
তিনি আরও বলেন, যেকোনো নির্বাচনেই কিছু অনিয়ম ঘটে। কিন্তু বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনাকে ঢালাওভাবে দেখে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বিতর্কিত করার একটা প্রচেষ্টা চলছে। অনিয়মের কোনো তথ্য কেউ হাজির করতে পারেনি। জঙ্গি দমনের যুদ্ধের ভেতর দিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনকে দেখতে হবে। এবারের নির্বাচন সেই জঙ্গি দমনের ভেতর দিয়েই অনুষ্ঠিত হয়েছে। নানা ধরণের হুমকি-ধামকির মধ্য দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
মহাজোট সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা নির্বাচনের মাঠে না গিয়ে গায়েবি শক্তির আশায় বসেছিলেন। এরকম একটি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে প্রশাসনকে নির্বাচন পরিচালনা করতে হয়েছে। তবে দেশের জনগণ চায়নি ড. কামাল হোসেনের হাত ধরে দেশ আইএসআই, জঙ্গি, রাজাকার ও পাকিস্তানি শক্তির কাছে চলে যাক।