মিরসরাই প্রতিনিধি
উপজেলার আবু তোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একেরপর এক ঘটনা করে ব্যহত করছে শিক্ষা কার্যক্রম। মাত্র দুই মাস আগে (৩১ আগস্ট) তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের আবুতোরাব বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সাইদুল ও তার সহপাঠীদের হাতে লাঞ্ছিত হন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক রতন কুমার দাশ। এর দুই মাস পর গত মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) এবার মাধ্যমিকের নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় আবারো সে সাইদুলের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শহীদ মিনারে ভাংচুর চালায়।
অবশ্য এবার শেষ রক্ষা হয়নি। বখাটে ছাত্র সাইদুলকে গতকাল বুধবার (৭ নভেম্বর) জেল হাজতে পুরেছে মিরসরাই থানা পুলিশ। পাশপাশি তার ৫ সহপাঠীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫-৬ জনকে আসামী করে থানায় মামলা করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মর্জিনা আক্তার। তবে আসামীদের বেশিরভাগ পুলিশের হাতে ধরা না পড়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
স্কুল প্রধান শিক্ষক মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘মূলত আমাদের এসব ছাত্র মাদক সেবনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছে। তারা বেশ উশৃঙ্খল এর আগেও একাধিক ঘটনা তারা ঘটিয়েছে। আমাদের এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেছে। এবার ক্লাশরুম বাথরুম ও শহীদ মিনারে ভাংচুর চালিয়েছে। এসব বিষয়ে বেশ কয়েক দফা অভিভাবকদের সাথে বৈঠকও করা হয়েছে। প্রকৃত অর্থে কোন সুরাহা হয়নি। আমরা বাধ্য হয়ে জড়িত ছাত্রদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছি। তবে আমরা গভীর শঙ্কার মধ্যে রয়েছি।’
গত মঙ্গলবার সংঘটিত ঘটনার ব্যাপারে জানা গেছে, ২০১৯-২০ শিক্ষা বর্ষের মাধ্যমিকের নির্বাচনী পরীক্ষায় বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক শাখায় ১৬৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে অকৃতকার্য হয় ৬৬ শিক্ষার্থী। গত ৫ নভেম্বর প্রকাশিত হয় নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল। এতে উত্তীর্ণ হয় ৯৮ শিক্ষার্থী। প্রকাশের দিন বিকেল বেলা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া একদল শিক্ষার্থী সাইদুলের নেতৃত্বে হঠাৎ বিদ্যালয়ে ঢুকে এলোপাতাড়ি ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রতন কুমার দাশকে প্রধান করে অভ্যন্তরীণ তদন্তের জন্য ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে দ্রæত তদন্ত শেষ করে প্রদিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে বখাটে ছাত্রদের বিরুদ্ধে স্কুল প্রধান শিক্ষকের মামলা প্রসঙ্গে মিরসরাই থানার ওসি জাহিদুল কবির বলেন, ‘স্কুলে ভাংচুরের ঘটনায় প্রধান শিক্ষক বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলার আসামী সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার আদালতে প্রেরণ করা হয়। বিজ্ঞ আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠায়। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারেও চেষ্টা চলছে।’