মিরসরাই প্রতিনিধি
দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল ‘মিরসরাই ইকোনোমিক জোন’ ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান শিল্পনগরী’র ফোরলেন সড়কের আবুতোরাব-বড়তাকিয়া সড়কের উপর মাটি রেখে একাংশ বন্ধ করেই চলছে মাটি খনন ও ভরাটের কাজ। এমতাবস্থায় প্রচন্ড ধুলো-বালু সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে যাত্রী ও পথচারীরা চোখ মুখ বন্ধ করে নাক ধরে থাকছেন। প্রতিনিয়ত যাত্রীদের চরম দেুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আশপাশের বাড়িগুলোর অবস্থা একেবারে নাজুক।
রাস্তায় বের হলেই বালুর মুখোমুখি হতে হচ্ছে যাত্রীদের। এলাকাগুলোতেও ধুলোয় নাকাল অবস্থা। দেখা মিলেছে পথচারীদের নাক চেপে চলাচলের দৃশ্য। অনেকেই আবার মাস্ক পরে চলাফেরা করছেন।
এই এলাকার রয়েছে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। প্রতিনিয়ত বালুর মধ্যদিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে, আবুতোরাবে অবস্থিত প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজ, শতবর্ষী বিদ্যাপীঠ আবুতোরাব বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, শতবর্ষী আবুতোরাব ফাজিল (স্নাতক) মাদ্রাসা।
অন্যদিকে রয়েছে নিজামপু বিশ্ববিদ্যালয়, মিরসরাই বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, খৈয়াচড়া উচ্চ বিদ্যালয়। এবং চোট-বড় আরো কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিত্যদিন চলাচলের একমাত্র এই পথ। তাই বাধ্য হয়ে চলাচল করছে তারা।
বালুর সঙ্গে এ যেন নিত্য বসবাস। সড়কের মধ্যে চলাচলরত সকল যানবাহন ধীরগতিতে চলাচল করায় সৃষ্ট হচ্ছে যানজট। ধুলায় শরীরের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ দুষণের।
ভাঙ্গাচোরা ও খানাখন্দ রাস্তা এবং রাস্তার একাংশে কাজের বালু ও মাটি ব্যবহারে সেখানকার ধুলার পাশাপাশি শুষ্ক মৌসুম হওয়ার ধুলার প্রকোপ আরও বেড়েছে।
নিজামপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএস ১ম বর্ষে পড়ুয়া ছাত্র ইফতেখার উদ্দিন শাহীন বলেন, প্রতিদিনই ধুলা-বালির মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। যে কারণে মাস্ক ব্যবহার করে চলাচল করতে হচ্ছে। এই রাস্তায় যে পরিমাণ ধুলা এতে করে চলাচল করাই কঠিন। যদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়মিত পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতেন তাহলে হয়ত আমাদের এই দ‚র্ভোগ পোহাতে হত না। তার দাবী, সড়কের পাশে মাটির নতুন রাস্তাটায় গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে পারলে কিছুটা ধুলাবালি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
এলাকার বাসিন্দারা ধুলার জ্বালায় বেশি অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ তাদের। কেবল ধুলোর কারণেই সড়কে এখন মাস্ক পরে চলাচল করছেন অনেকেই। ধুলা-বালিতে অতিষ্ট হওয়া এলাকাগুলোর বাসিন্দা ও পথচারীদের দাবি এই ধুলা-বালির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সু-ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
আবুতোরাব-বড়তাকিয়া সড়কের সিএনজিচালিত অটোরিক্সা চালক, মো: দেলোয়ার হোসেন বলেন, পেটের দায়ে গাড়ি চালায়, তাই কিচ্ছু করার নেই। ধুলোবালির মধ্যে আমরা প্রতিদিন গাড়ি চালাতে হচ্ছে।
প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজ শিক্ষিকা হামিদা আবেদীন পলি বলেন, ধুলোবালির অবস্থা এমন যে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। আমরা প্রতিদিন সিএনজিতে চলাচল করি, বড় গাড়িগুলোর কারনে ধুলো বেশী হয়। ম‚ল সড়কের বাইরে যে ফোরলেন সড়কের কাজ চলছে সেখানে বড় গাড়িগুলো দ্রæত গতিতে চলাচল করায় এবং সড়কের পাশে মাটি পেলে রাখায় বালির সৃষ্ট হয়ে উড়ছে ধুলো। মাটির রাস্তা দিয়ে গাড়ি এতো দ্রæত গতিতে চলে যে ধুলোর কারনে সামনে অন্য গাড়ি দেখাই যায় না। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা।
তিনি বলেন, ধুলোবালি থেকে রক্ষা পেতে হলে কর্তৃপক্ষ আগে বন্ধ করতে হবে মাটির রাস্তায় গাড়ি চলাচল। যেটা এখনও গাড়ি চলাচলের উপযোগী নয়। আর প্রতিদিন অন্তত দুবার পানি চিটানোর ব্যবস্থা করা হলে আমরা কিছুটা রক্ষা পাবো।