এম মাঈন উদ্দিন, মিরসরাই
অজোপাড়াগাঁয়ের আকাঁ বাঁকা মেঠো পথ দিয়ে যেতে যেতে হয়তো আপনার মনটা খারাফ হতে পারে। কিন্তু এই পথ ফেরিয়ে যখন হারিয়ে যাওয়া ফুটবলের শৈল্পিক কারুকাজ দেখবেন তখন মনটা সত্যি জুড়িয়ে যাবে। আহ! আগে আসলাম না কেন? যে মাঠে দেশের নামি-দামি ফুটবলারের পাশাপাশি নাইজেরিয়া, সেনেগালের ডুডু, ক্যন্ডি কামারা, ডমিনি, ইদ্রিস, শিলাসহ খেলোয়াড়রা মাঠ কাপাচ্ছেন। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে করেরহাট-পশ্চিম জোয়ার সড়কে মানুষের ঢল নামে। সবার গন্তব্য পশ্চিম জোয়ার অভিযান ক্লাব ফুটবল মাঠ। গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ফুটবলের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরে আনতে মিরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন নিজের অর্থায়নে ‘নয়ন চেয়ারম্যান গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট’ এর আয়োজন করেছেন। স্বেচচ্ছাসেবী সংগঠন অভিযান ক্লাবের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই টুর্নাামেন্ট চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি, ফেনী, ছাগলনাইয়া, ফটিকছড়ি উপজেলা থেকে ১৬টি দল অংশগ্রহণ করেছে। এখন টুর্নামেন্টের কোয়াটার ফাইনাল চলছে। প্রতিদিন খেলা পরিচালনা করেন বাপুপের তালিকাভুক্ত অভিজ্ঞ রেফারিরা। সর্বশেষ গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হওয়া টুর্নামেন্টের ২য় সেমিফাইনালে ছাগলনাইয়া ঘোপাল ফুটবল একাদশকে ট্রাইবেকারে ৫-৩ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে সেমিফাইনালে উঠেছে কুমিল্লার মিয়াবাজার স্পোটিং ক্লাব ফুটবল একাদশ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠের চারপাশে কানায় কানায় পরিপূর্ণ দর্শক। মনে হচ্ছে মোহামেডান-আবাহনির ফুটবল ম্যাচ চলছে। অতিথিদের জন্য নির্মিত হয়েছে স্থায়ী মঞ্চ। জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্যদিয়ে ম্যাচ শুরু করা হয়। খেলা পরিচালনা ও আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রনের জন্য রয়েছে টুর্নামেন্টের আহবায়ক সোলেমান উদ্দিন বাদশা ও সদস্য সচিব আমিনুল হক সজিবের নেতৃত্বে অভিযান ক্লাবের বিশাল ম্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। শুধু মিরসরাই নয়, ছাগলনাইয়া, ফটিকছড়ি, রামগড়, সীতাকুন্ড সহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে শত শত ফুটবলপ্রেমী দর্শক খেলা দেখতে এই মাঠে ছুটে আসেন।
রামগড় থেকে খেলা দেখতে আসা ফুটবল প্রেমী বেলাল বলেন, গ্রামের মধ্যে এতো সুন্দর ফুটবল খেলা ভাবতেও অবাক লাগে। আমি এই পর্যন্ত ৫দিন খেলা দেখেছি। আমার বেশি ভালো লেগেছে কুমিল্লা মিয়াবাজার স্পোটিং ক্লাব ও মিরসরাই স্পোটিং ক্লাবের খেলা। এখন যে ম্যাচগুলো হবে এইগুলো খুব উত্তেজনাপূর্ন হবে। ফাইনাল পর্যন্ত সব ম্যাচ দেখবো ইনশাআল্লাহ।
টুর্নামান্টের আয়োজক চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, ফুটবলের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে আমার এই ক্ষুদ্র আয়োজন। আমার বিশ্বাস এখান থেকে হয়তো বেরিয়ে আসবে জাতীয় মানের ফুটবলার। এছাড়া যুব সমাজ খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকলে মাদকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা পাবে। টুর্নামেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন করতে সকলের সহযোগীতা কামনা করেন তিনি।