শান্তি মিশন পরিদর্শনে গিয়ে না ফেরার দেশে রৌশন আরা বেগম

395

ডেস্ক রিপোর্ট

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন পরিদর্শনে গিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি ও পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর রৌশন আরা বেগম। ৫ই মে কঙ্গোতে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হয়েছেন (ইন্না লিল্লাহে……রাজিউন)। তিনি বাংলাদেশের শীর্ষ নারী পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। স্বামী, একমাত্র কন্যা ও ভাই-বোনসহ বহু আত্মীয় স্বজন এবং গুনগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি। পুলিশ সদরদপ্তরসূত্রে জানা গেছে, রৌশন আরা বেগম ৩রা মে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন কার্যক্রম পরিদর্শন এবং মেডেল প্যারেডে অংশ নিতে কঙ্গো গিয়েছিলেন। সেখানে দায়িত্ব পালনকালে তাঁকে বহনকারী গাড়িটি কঙ্গোর রাজধানী কিনসাসায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। একটি লরি এসে তাকে বহনকারী গাড়িকে ধাক্কা দিলে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

এসময় তার সঙ্গে ছিলেন পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম। তাকে এবং গাড়ি চালককে গুরুতর আহত অবস্থায় সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রৌশন আরা বেগম বিসিএস ৭ম ব্যাচে পুলিশ ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৮৮ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি সহকারি পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। প্রথম নারী পুলিশ সুপার হয়ে অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সঙ্গে ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত মুন্সিগঞ্জ জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার, স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) ঢাকায় বিশেষ পুলিশ সুপার, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও ভারপ্রাপ্ত কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৭ সালের ১২ই ডিসেম্বর থেকে ২০০৮ সালের ২৭ শে এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ছিলেন। এছাড়া রৌশন আরা বেগম ঢাকায় ডিটিএসস, সিআইডির কমান্ড্যান্ট (অতিরিক্ত ডিআইজি), স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন এন্ড ইন্টেলিজেন্সে (সিআইডি) ডিআইজি ও ২০১৩- ২০১৪ সালে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের ডিআইজি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ সালের ৬ই নভেম্বর তিনি অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি পান।

রৌশন আরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে কৃতিত্বের সঙ্গে বিএসএস (অনার্স) ও এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন। পুলিশের এই চৌকুস কর্মকর্তা যুক্তরাজ্যের পুলিশ স্টাফ কলেজ ব্রামশিল থেকে স্ট্যাটেজিক প্লানিং কোর্স এবং লিডারশিপ কোর্স ফর ফিমেল লিডারস ইন ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি কোর্সে অংশগ্রহন করেছেন। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন কসোভো এবং সুদানে দায়িত্ব পালন করেছেন। পুলিশ বাহিনীতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল ও দুইবার আইজিপি ব্যাচ পেয়েছেন। তিনি ১৯৯৮ সালে মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার থাকাকালীন ‘অনন্যা শীর্ষ দশ-১৯৯৮’ পুরস্কার এবং ২০১২ সালে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব উইমেন পুলিশের স্কলারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১২ লাভ করেন। বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের সভাপতি হিসেবে তিনি ২০১১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া, বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের বাংলাদেশ পুলিশের ফোকাল পয়েন্ট এবং নেটওয়ার্কের কার্যকরী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here