নিজস্ব প্রতিবেদক
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন বিএনপি গ্রহণ করবে না জানিয়ে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনেও বিএনপি যেতে চেয়েছিল কিন্তু সরকার ও নির্বাচন কমিশন যে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারেনি। সেটি সেই সময়ে অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণিত হয়েছে। এখনো বলি- বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, তার সাথে আলোচনা করেন তাহলে দেশে সুস্থ পরিবেশ সৃষ্টি হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে এটা যদি ভেবে থাকেন তাহলে আপনাদেরকে পাগল ছাড়া কিছুই ভাববো না।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন আয়োজিত’ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকুসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণের শর্ত জানিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ডিসেম্বর ও জানুয়ারির মধ্যে যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে বিএনপি যাবে কিন্তু পরিষ্কার কথা হচ্ছে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন আমরা গ্রহণ করবো না। বর্তমান যে নির্বাচন কমিশন তিনি এক সময় চাকরি হারিয়েছিলেন শেখ হাসিনা তাকে নিয়ে এসেছে তার উপকারের জন্য। তিনি নিজেও বলেছেন দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের গ্যারান্টি দিতে পারবে না।
দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের গ্যারান্টি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং ২০ দলের দাবি মেনে নেয়া- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে এই নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে আর এটির জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি আরো বলেন, আমরা শুধু আন্দোলন করবো নির্বাচনে যাব না এটা ঠিক না দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন গ্যারান্টি পেলে আমরা নির্বাচনে যাব। আর সেই সুষ্ঠ নির্বাচনের গ্যারান্টি মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং ২০ দলের দাবি মেনে নেয়া সেই সাথে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা।
সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের সমালোচনা করে দুদু বলেন, শেখ হাসিনা নাকি দেশে উন্নয়নের বন্যা বইয়ে দিয়েছে তিনি নাকি কত কিছু করেছে আমরা বলি দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনই একটি দলের সাফল্য কতটুকু তা প্রমাণ হয়। দেশের সব রাজনৈতিক দল একটি নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেজন্য সবাই রাজপথে নামার উদ্যোগ নিয়েছে সে ক্ষেত্রে সরকার যদি সিদ্ধান্ত না নেয় তাহলে তারা ভুল করবে।
বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ভীষণভাবে অসুস্থ। তার চিকিৎসার জন্য সরকারগঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের তিনজনই আওয়ামী লীগের। তারাও বলেছে খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ, অবিলম্বে তাকে হাসপাতোলে স্থানান্তর করতে হবে। আমাদের সিনিয়র নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করে দাবি জানিয়ে ছিল বেগম খালেদা জিয়ার পছন্দমতো ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বীকার করার পরও দুঃখের বিষয় হলো সরকার গঠিত বোর্ড করেছে বিএনপির আবেদন খালেদা জিয়ার আবেদন সরকার অগ্রাহ্য করেছে। তারপরও এই বোর্ড সুপারিশ করেছে হাসপাতালে স্থানান্তর করার জন্য সেটাও করা হয়নি।
তিনি আরো বলেন, এই সরকার এত নির্মম যে, তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতিত হয়েছেন তাকে শুধু মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক করে রাখা হয়নি তার সুচিকিৎসাও দেয়া হচ্ছে না। তাই এই সরকারকে বলব এই দিন দিন নয় আরো দিন আছে এই দিনই নিয়ে যাবে সেই দিনের কাছে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক গোলাম সরোয়ারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা: মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কামরুদ্দীন এহিয়া খান মজলিস সারোয়ার, জাগপার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান, জিনাফের সভাপতি মিয়া মো: আনোয়ার প্রমুখ বক্তব্য দেন।