৮শ’ মিটার রাস্তার ইট তুলে বিক্রি করে দিলেন আ’লীগ নেতা!

318

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ৮শ’ মিটার সরকারি রাস্তার ইট তুলে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে নলতা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পুলক সরকারের বিরুদ্ধে। ইট তোলার ফলে ওই রাস্তায় যাতায়াতে ব্যাপক দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা মৌসুমের প্রাক্কালে ইট তুলে নেয়ার ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, নলতা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত কাজলা হাটখোলা থেকে উত্তর কাজলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ৮শ’ মিটার ইটের সোলিং রাস্তার প্রায় ৫০ হাজার ইট তুলে জনৈক মনিরুল ইসলামের নিকট বিক্রয় করেছেন পুলক সরকার। একাজে তাকে সহায়তা করেছে এলজিইডি’র সুপারভাইজার আশিস। ইট তোলার বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে নলতা ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল রহমানের কাছে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

তারা জানান, পুলক সরকারের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেক অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় এক মন্দিরের নামে বরাদ্দকৃত সোলার নিজের বাড়িতে লাগিয়েছেন তিনি। এছাড়াও অন্য এক মন্দিরের সোলার আত্মসাৎ করার পর বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় চাপের মুখে তিনি সেটি ফেরত দেন। এর আগে তিনি মন্দিরের নামে বরাদ্দকৃত টাকা তুলে আত্মসাত করেছেন।

তারা বলেন, মন্দির কমিটির সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদক বলেন সব তিনি নিজেই। তার ইচ্ছা অনুযায়ী চলে সব কাজ। এমনকি রাস্তার ইট তোলার বিষয়টি মন্দির কমিটির কেউ জানেন না বলে তাদের দাবি।

এদিকে, উপজেলা এলজিইডি’র সুপারভাইজার আশিসের বিরুদ্ধেও এর আগে রাস্তার ধারের গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পুলক সরকার বলেন, ‘রাস্তাটি কার্পেটিং করার জন্য ছবি তুলতে হবে, তাই উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার সাহেব রাস্তার ইট তুলতে বলেছিল। পরে এমপি মহোদয়ের প্রতিনিধি আব্দুল খালেক ও জেলা পরিষদের সদস্য আসাদুর রহমান সেলিমের কথামতো ইটগুলো তোলা হয়েছে।’

ইট বিক্রির টাকা কী হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইট বিক্রির সব টাকা এখনো পাইনি। টাকা পেলে মন্দির সংস্কারের কাজে ব্যয় করা হবে।’

ইতোপূর্বে মন্দিরের জন্য কোনো সরকারি বরাদ্দ পেয়েছেন কী না জানতে চাইলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করলেও একপর্যায়ে তিনি পাঁচ বছর আগে বরাদ্দ পাওয়ার কথা স্বীকার করেন।

এলজিইডির সুপারভাইজার আশিস জানান, ‘রাস্তার ইট তোলার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। ওয়ার্ড সভাপতি পুলক সরকার নিজেই এ কাজটি করেছেন। তবে কেউ যদি মসজিদ বা মন্দিরের কাজের জন্য রাস্তার ইট তোলে তাহলে অনুমতি নিয়ে তুলতে পারে। আমার বিরুদ্ধে রাস্তার ধারের গাছ কাটার যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

নলতা ইউপির চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান জানান, স্থানীয় লোকজন রাস্তা থেকে ইট তোলার খবর আমাকে জানালে আমি বিষয়টি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারকে জানিয়েছি। সোমবার আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানাব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here