মিরসরাইয়ে ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে

452

মিরসরাই প্রতিনিধি


ঈদকে ঘিরে ১০ রমজান থেকে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জমে উঠেছে কেনাকাটা। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন বাজারের মার্কেটগুলোতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। শেষ মুহুর্তে পছন্দের কাপড় ফুরিয়ে যাবে, দামও থাকবে চড়া। তাই মধ্য রোজার আগে থেকে কেনাকাটা শুরু করেছেন তারা। ক্রেতাদের কাছে টানার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন ব্যবসায়ীরাও। ক্রেতাদের প্রতি লক্ষ্য রেখে দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন পোশাকে সাজানো হয়েছে উপজেলার মার্কেটগুলো।

দেশীয় জামদানি, টাঙ্গাইল ও তাঁতের নতুন ডিজাইনের শাড়িসহ নারীদের বিভিন্ন পোশাক বিক্রি হচ্ছে ধুমধারাক্কা। ফ্যাশনের পাশাপাশি ঐতিহ্যতেও গুরুত্ব দিচ্ছেন নারীরা। আর প্রচুর কালেকশনের পাশাপাশি দাম এখনো কম থাকায় খুশি তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বড় ব্যবসায়ীক প্রাণকেন্দ্র বারইয়ারহাটের বিভিন্ন বিপনি বিতানে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর প্রতিটি মার্কেট। এতের মধ্যে নারীদের ভিড় সবচেয়ে বেশি।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এবার ঈদের বাজারে তারা নিত্যনতুন নামের বেশকিছু নারী, শিশু ও পুরুষের কাপড় তুলেছেন দোকানে। নিত্যনতুন ডিজাইনের দেশি ও বিদেশি থ্রীপিচ, গাউন, শাড়ি অন্যান্য বস্ত্রসহ সবকিছু মিলছে এখানকার মার্কেটে। শহরের মানের এবং পছন্দনীয় ঈদের কাপড় স্থানীয় মার্কেটগুলোতেই পাওয়ায় এখানকার ক্রেতারা ঈদের কেনাকেটায় মিরসরাইয়ের মার্কেটের উপরই নির্ভর করছেন। এছাড়া এলাকার সার্বিক আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি ভালো থাকায় ক্রেতারা ঈদের কেনাকেটার জন্য এবার স্থানীয় মার্কেটমুখী রয়েছে। ঈদের কেনাকাটার উদ্দেশ্যে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিপুলসংখ্যক ক্রেতা ভিড় জমাচ্ছে। ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সব শ্রেণীর মানুষ। ভিড় জমাচ্ছেন মার্কেটগুলোতে। পেশার মানুষ তাদের সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়ে নির্বিঘেœ কেনাকাটা করতে পারছেন।

সরেজমিনে ঘুরে সবচেয়ে বেশি ভীড় লক্ষ্য করা গেছে বারইয়ারহাট মসজিদ গলির লাকী শপিং মলে। এছাড়াও পালকি ক্লথ, শাড়িকা, রূপা ক্লথ, শাড়ি কালেকশান,মদিনা ক্লথ, মাওলানা ক্লথ, উপহার ক্লথ, ফেমাস গার্মেন্টস, আল আমিন মার্কেটের মাতৃছায়া বুটিকস, গ্রীণ টাওয়ারের রাজকুমার, সুলতান, আল আমিন মার্কেট, জমিদার মার্কেট, জামালপুর সুপার মার্কেট, মহিউদ্দিন বাবুল মার্কেট, মৌচাক মার্কেট, মসজিদ মার্কেট ও সেঞ্চুরী শপিং কমপ্লেক্স ম্যাক্স ফ্যাশন, সাতরং, ওয়ান ফ্যাশনে ক্রেতাদের প্রচন্ড ভীড় রয়েছে। শাড়ী থ্রিপিসের পাশাপাশি প্রসাধনী, পারফিউম, কসমেটিক সামগ্রী, জুতা সহ বিভিন্ন পন্য ক্রয় করছেন ক্রেতারা। মসজিদ গলির হাসান সুজ, অহনা সুজ, আয়েশা সুজ, গ্রীন টাওয়ারে অবস্থিত লটো, বাটা, অমনি সুজ, আল আমিন মার্কেটে এপেক্স শো-রুমে ভালো বিকিকিনি লক্ষ করা গেছে। এছাড়া উপজেলার জোরারগঞ্জের যুবরাজ মার্কেট, আল-মদিনা শপিং সেন্টার, স্কুল মার্কেট, মিঠাছড়ার শাহজাহান সুপার মার্কেট, মিরসরাই সদরে টুকু মিয়া মার্কেট, কাশেম শপিং সেন্টার, আবুতোরাব বাজারে ভূঁইয়া ক্লথ, বামনসুন্দর দারোগাহাট, আবুরহাট, নিজামপুর কলেজ, বড়দারোগাহাট বাজারে ঈদের বাজার জমে উঠেছে। বিক্রির দিক থেকে এবারো শীর্ষে রয়েছেন বারইয়ারহাটের ঐতিহ্যবাহী লাকি শপিং মল ও মিঠাছড়ার আল-আমিন।

কথা হয় লাকি শপিং মলে ঈদের কেনাকাট করতে আসা উপজেলার ধুম ইউনিয়নের নাহেরপুর গ্রামের গৃহবধূ তাহমিনা আক্তারের সাথে। তিনি বলেন, এখানে বিভিন্ন আইটেমের কালেকশান বেশি থাকায় পচন্দ করে কেনা যায়। আরেকটি পন্যের জন্য অন্য জায়গায় যাওয়ার ঝামেলা নেই।

জানা গেছে, এবার ঈদে জামার মধ্যে রয়েছে ডালি, স্বপ্নের দেশ, অস্থির। মেয়েদের গাউনের মধ্যে রাজ কুমারী, ডায়মন্ড, ললিপপ, জবা। থ্রীপিচের মধ্যে গরিলা, কাবেরী, বিনয় ইত্যাদি। শাড়ির মধ্যে দেশি কাতান ছাড়াও রয়েছে জবা, জবা বড়ভাবী, ক্রাস-২, নিল পদ্ম, পদ্মরাণী, রাজপরী, রাজেশ্বরী, রাজগুরু। ইন্ডিয়ার চুন্দ্রি কাতান, চায়না সিল্ক, পাকিস্তানী জর্জেট, দেশীয় মসলিন, কাতান শাড়ি, মেয়েদের কাটপিচ, লং থ্রপিচ, রেডিমেড লংগাউন, বম্বে গাউন, টুপাট কুটি, পাকিস্থানী, ইন্ডিয়ান পাশাপাশি বম্বে, মিশরী ও দেশীয় পাঞ্জাবির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কাপড়ের পাশাপাশি জুতা, প্রসাধনীর দোকানেও বেশ ভীড় করছে ক্রেতারা।

লাকী ফ্যাশন মলের স্বত্বাধিকারী মোঃ শামসুদ্দিন বলেন, বেচা-কেনা মোটামুটি ভালো চলছে। আশা করছি ২০ রমজানের পর আরো বেশি বিক্রি হবে। অন্যদিনের তুলানায় ছুটির দিনে ভিড় বেশি হচ্ছে।

সেঞ্চুরী শপিং কমপ্লেক্সের ওয়ান ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী মোঃ আনোয়ার হোসেন ও ম্যাক্স ফ্যাশনের কামরান সরোয়ার্দী জানান, এবার ভালো বিক্রয় হচ্ছে। দিনে গ্রাম অঞ্চলের ক্রেতাদের আনা-গোনা সব চাইতে বেশি। নতুন নামে ও ডিজাইনের জিন্স প্যান্ট, শ্যার্ট বেশি বিক্রি হচ্ছে।

জোরারগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার আবেদ আলী বলেন, ঈদ উপলক্ষে নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে ও নিরাপত্তা দিতে পুলিশের কয়েকটি টিম দায়িত্ব পালন করছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here