নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষনেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে দেশে যে উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে এ জন্য সরকারকেই দায় নিতে হবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঐক্যফ্রন্টের স্ট্রিয়ারিং বৈঠক শেষে তিনি এমন হুশিয়ারির দেন। স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন-জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন, বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর মঈন খান, জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সুব্রত চৌধুরী, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ প্রমুখ।
মান্না বলেন, যদি কোনো কারণে এবার খালেদা জিয়ার প্রতি সুবিচার না করা হয়, অবিচার করা হয়, জামিন দেয়া না হয়, মুক্তি দেয়া না হয়, তাহলে যে উদ্ভব পরিস্থিতি হতে পারে তার জন্য এই সরকার সর্বতভাবে দায়ী থাকবে। এ ব্যাপারে আমরা সরকারকে সতর্ক করে দিচ্ছি। ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ৬৬৪ দিন কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। যে মামলাত তাকে সাজা দেয়া হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিশেষ করে তার শারিরীক অবস্থা বিবেচনা করে আমরা তার আশু মুক্তি দাবি করছি। আমাদের সভার আজ প্রধান দাবী এটাই । আমরা মনে করি এই দাবী মানবিক। তিনি জামিন পাওয়ার অধিকার রাখেন।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের দেখা করার কথা ছিল কিন্তু তা এখনো হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আ স ম আবদুর রব বলেন, আমরা ২২ তারিখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করি, উনি অত্যন্ত সরলমনে আমাদেরকে বললেন, ওনার ( খালেদা জিয়ার) আত্মীয় স্বজন পরিবারের সবাই দেখা করছে, আপনারা কেন পারবেন না। আপনারা অবশ্যই দেখা করবেন। নীতিগতভাবে উনি আমাদেরকে দেখা করার অনুমতি দিয়েই দিল। এখন শুধু আইজি প্রিজনের কাছে দায়িত্বটা দিচ্ছি। যাতে অফিসিয়াল ফরমালিটিটা মেনটেইন করা হয়। এই পর্যন্ত আইজি প্রিজন সাহেব আমাদের কোনো সদোত্তর দিতে পারেন নাই। এ থেকে আমরা বুঝতে পারছি তারা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমাদের দেখা করার সুযোগ দিচ্ছে না।
খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গে ড. মঈন খান বলেন, কমনসেন্স থেকে একটা কথাই বলতে চাই, আমরা যেটা দেখি এবং আমাদের যে অভিজ্ঞতা এ ধরনের সহস্র সহস্র মামলায় জামিন দেয়া হয়। আইনের ইতিহাসে এ ধরণের মামলায় জামিন পেতে ৫ মিনিটের বেশী লাগে না। বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের অবস্থান কী থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামী ৫ তারিখের পরিস্থিতি অবলোকন করবো তারপর আমরা সিদ্ধান্ত জানাবো।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, জামিনের ব্যাপারে একটা তথ্য দিতে চাই। খুনের আসামি, যেখানে খুনের অপরাধে তার দণ্ড। নিম্ন আদালতে ফাঁসি হয়েছে। হাইকোর্টে ফাঁসি হয়েছে, কনফারমেশন তাতে প্রায় দুই থেকে তিনমাস সময় লাগে। সেই মামলায় ফুলবেঞ্জ আসামিকে জামিন দিয়েছে। যতদিন পর্যন্ত জামিন না হয় ততদিন পর্যন্ত তিনি পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারবেন। এ জাতীয় অসংখ্য উদাহরণ আইনে আছে। সেই তুলনায় খালেদা জিয়ার মামলা এটা রাজনৈতিক। তাকে জামিন না দেয়ার কোনো কারণ নেই। এটা আমরা বলেছি, মানবিক কারণে এবং নৈতিক কারণে, সংবিধানগত অধিকারের দিক থেকে তাকে জামিন দেয়া উচিৎ।
খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে কিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নে ড. কামাল হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়ার সুযোগ অবশ্যই আছে। এতোদিনেও কেন তার জামিন হচ্ছে না আমি জানি না। খালেদা জিয়ার জামিন না হলে বিচার ব্যবস্থা প্রশ্নের সম্মুখিন হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমাদের আজকে আলোচনার বিষয় ছিল না।