ক্রীড়া প্রতিবেদক>>>
সিলেট পর্বের পঞ্চম ও বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ৩৩তম ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এই জয়ে আবারো পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠলো চট্টগ্রাম। সেই সাথে প্লে-অফও নিশ্চিত করলো তারা। ১০ খেলায় ৭ জয় ও ৩ হারে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে টেবিলের শীর্ষে চট্টগ্রাম। ৯ খেলায় ৫ জয় ও ৪ হারে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে কুমিল্লা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেয় চট্টগ্রাম। বল হাতে নিয়েই খুলনা টাইগার্সের ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলে দেন চট্টগ্রামের দুই পেসার মেহেদি হাসান রানা ও রুবেল হোসেন। ১৪ রানের মধ্যে খুলনার টপ-অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান রানা-রুবেল।
ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজ ৪ ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক খেলোয়াড় হাশিম আমলা ৮ রান করে রানার শিকার হন। আর শামসুর রহমানকে শুন্য রানে বিদায় দেন রুবেল। ফলে ১৪ রানেই ৩ উইকেট হারায় খুলনা।
এ অবস্থা থেকে দলকে বিপদমুক্ত করেন দক্ষিণ আফ্রিকার রিলি রুশো ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। দেখেশুনে খেলে শুরুর ধাক্কা সামলে উঠেন তারা। ফলে ১১ ওভারে ৬৩ রান পেয়ে যায় খুলনা। তবে রুশো-মুশফিকের জমে উঠা জুটিতে চট্টগ্রামের জিয়াউর রহমান। ২৪ বলে ৩টি ও ১টি ছক্কায় ২৯ রান করে জিয়াউরের বলে বোল্ড হন মুশফিক। চতুর্থ উইকেটে রুশোর সাথে ৪৬ বলে ৪৯ রান যোগ করেন মুশফিক।
মুশফিক ফিরলে স্বদেশী রবি ফ্রাইলিঙ্ককে নিয়ে ৩৫ বলে ৪৩ রানের জুটি গড়ে রুশো। ২টি করে চার-ছক্কায় ৪০ বলে ৪৮ রানে রুশো আউট হলে খুলনার পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা পুরোপুরিভাবেই ব্যর্থ হন। ফলে ১ বল বাকী থাকতে ১২১ রানের ছোট পুঁজি গড়ে খুলনা। ফ্রাইলিঙ্ক ১৭ বলে ২৩ রান করেন। চট্টগ্রামের রুবেল-রানা ৩টি করে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেসরিক উইলিয়ামস ২টি উইকেট নেন।
১২২ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলকে দুর্দান্ত সূচনা এনে দেন চট্টগ্রামের দুই ওপেনার ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেন্ডন সিমন্স ও জুনায়েদ সিদ্দিকী। ১০ ওভারে ৬৯ রান যোগ করেন তারা। এরমধ্যে ৩৬ রান অবদান ছিলো সিমন্সের। ২৮ বল মোকাবেলা করে ৩টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন সিমন্স। প্রথমবারের মত এবারের আসরে খেলতে নামা স্পিনার আলিস ইসলাম শিকার করেন সিমন্সকে। গেল বছর বিপিএলে প্রথমবার খেলতে নেমেছিলেন তিনি। প্রথম ম্যাচেই চমক দেখান আলিস। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে হ্যাট্টিকসহ ২৬ রানে ৪ উইকেট নেন আলিস।
সিমন্সের মত বোলারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আউট হন আরেক ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিকীও। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৯ বলে ৩৮ রান করেন জুনায়েদ। তার আউটে ব্যাট করার সুযোগ আসে শ্রীলংকার আসলে গুনারত্নে। প্রথমবারের মত এবারের আসরে খেলতে নেমে প্রথম বলেই বোল্ড হন গুনারত্নে। বোলার ছিলেন ফ্রাঙ্কলিন।
ম্যাচ শেষ করার সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাঁদউইক ওয়ালটন। ফ্রাইলিঙ্কের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ৭ রানে থামেন ওয়ালটন। এরপর উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানকে নিয়ে ১১ বল বাকী রেখে চট্টগ্রামের জয় নিশ্চিত করেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ২টি করে চার-ছক্কায় ২৭ বলে অপরাজিত ৩০ রান করেন ইমরুল। ৬ রানে অপরাজিত থাকেন নুরুল। খুলনার ফ্রাইলিঙ্ক ২০ রানে ২ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
খুলনা টাইগার্স : ১২১/১০, ১৯.৫ (রুশো ৪৮, মুশফিকুর ২৯, রুবেল ৩/১৭)।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স : ১২৪/৪, ১৮.১ (জুনায়েদ ৩৮, সিমন্স ৩৬, ফ্রাইলিঙ্ক ২/২০)।
ফল : চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মেহেদি হাসান রানা (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স)।