সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রলীগের বর্বর হামলা, আহত ১০

316

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর বর্বর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। রোববার রাজধানীর সাইন্সল্যাব এলাকায় সাংবাদিকদের ওপর এ হামলায় এপির সাংবাদিক এম এ আহাদসহ কর্তব্যরত অনেক সাংবাদিক আহত হন।

ওই এলাকায় কর্তব্যরত সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে, ক্যামেরা দেখলেই তেড়ে আসছিলেন তাঁরা। মাথায় হেলমেট আর হাতে রামদা-কিরিচ। কারো হাতে লাঠিসোঁটা কিংবা রড। দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত ছাত্রলীগ ও যুবলীগ ওই এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে। পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে চলছিল তারা।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে মাঠে নামা শিক্ষার্থীদের ধরে ধরে পেটাচ্ছিলেন তাঁরা। রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সংবাদ কভারেজের বিষয়টি টের পেয়ে তারা সাংবাদিকদের ওপর হামলে পড়ে। এ সময় অন্তত পাঁচজন সাংবাদিককে মারধর করেছে তারা।

আহত সাংবাদিকরা হলেন এপি’র এম এ আহাদ, দৈনিক বনিক বার্তার পলাশ শিকদার, নিউজ পোর্টাল বিডি মর্নিং আবু সুফিয়ান জুয়েল, দৈনিক জনকণ্ঠের জাওয়াদ ও প্রথম আলোর সিনিয়র ফটোগ্রাফার সাজিদ হোসেন ও প্রতিবেদক আহম্মেদ দীপ্ত। এছাড়া ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও আলোকচিত্রীরা ছাত্রলীগ-যুবলীগের যৌথ হামলায় আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে আহতরা হলেন রাহাত করীম, এনামুল হাসান, মারজুক হাসান, হাসান জুবায়ের ও এন কায়ের হাসিন উল্লেখযোগ্য।

আহত সাংবাদিকদের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছ।

কর্তব্যরত সাংবাদিকরা জানান, হামলাকারীরা রাহাতের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন। রড, লাঠি দিয়ে মারধর করে তাঁকে রক্তাক্ত করা হয়।

লাঠিসোঁটা হাতের যুবকদের মধ্যে মহানগর উত্তরের ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ছিলেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

আহতদের দাবি, পুলিশের সামনেই সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল বলেও তারা অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে দৈনিক বনিক বার্তার ফটোগ্রাফার পলাশ শিকদার বলেন, ‘আমি সিটি কলেজের সামনের পুলিশ বক্সের সামনে ছবি তুলছিলাম, তখন এপি’র ফটোগ্রাফার এম এ আহাদকে মারধর করা হচ্ছিল। আমি তাকে বাঁচাতে যাই। তখন হামলাকারীরা আমাকেও মারধর করে। লাঠি ও রড দিয়ে পিটিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘হামলাকারীরা সবাই ছাত্রলীগ। আমরা এই হামলাকারীদের বিচার চাই।’

দৈনিক প্রথম আলোর সিনিয়র ফটোগ্রাফার সাজিদ হোসেন বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ছাত্রলীগ আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।’

পুলিশের সামনেই সাংবাদিকদের মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এমন কোনও অভিযোগ পাইনি।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here