হিতকরী’র কার্যক্রম দাগ কেটেছে জনপ্রতিনিধির

351

 

মিরসরাই প্রতিনিধি
মিরসরাইয়ের সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী ও অরাজনৈতিক সংগঠন হিতকরী। হাটি হাটি পা পা করে ২০বছরে পা দিয়েছে ইতোমধ্যে। উপজেলার আবুতোরাব বাজারে অবস্থিত সংগঠনটি আবুতোরাবের গন্ডি পেরিয়ে বর্তমানে চট্টগ্রাম সহ সারা দেশে সুনামের সাথে কাজ করছে। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে তৈরি করেছে তারা “করোনা ক্রাইসিস রেসপন্স টিম” যা গত দেড় মাস ধরে চষে বেড়াচ্ছে উপজেলার করেরহাট থেকে সাহেরখালী পর্যন্ত। পৌঁছে দিচ্ছে কর্মহীন, দুঃস্থ ও অসহায় মানুষদের ঘরে ঘরে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী। চলতি রমজানে তা আরো দ্বীগুন ভাবে কাজ করছে তারা। ইতোমধ্যে নজর কেড়েছে উপজেলা ইউএনও, সমাজ সেবা অফিসার, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগুলোর। তারই দ্বারাবাহিকতায় গতকাল রাতে উপজেলার মঘাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের স্বনামধন্য চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন মাষ্টার তার ব্যক্তিগত ফেজবুক আইডিতে তিনি হিতকরীর ভূয়সী প্রশংসা করে লিখেন যা হুবহু তুলে ধরা হলো।

“কিছুকথা-হিতকরীর”
যখন আমি নির্বাচন করবো মনস্থির করলাম সমাজের নানা শ্রেনী পেশার মানুষের সাথে মিশতে গিয়ে পরিচয় একদল তরুনের সাথে।
যাদের সবাই শিক্ষিত মার্জিত আর সমাজের জন্য নিবেদিতপ্রান কর্মী।
যারা ২০০/৫০০ টাকার জন্য কারো পিচনে ঘুর ঘুর করেনা।বরং নিজেদের পকেট থেকে দিয়ে,নিজের শ্রম দিয়ে কাজ করে।
নাম জানলাম-হিতকরী
তাদের স্লোগানটাও বেশ সুন্দর-
উপকার করো উপকৃত হবে।
আমি যেহেতু জনপ্রতিনিধি আমার একটা দায়বদ্ধতাতো আছে।
সেই হিসেবে খোজ নিই এরা কারা?
কি তাদের উদ্দেশ্য?
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসতে পারে। অনুসন্ধানে দেখলাম এরা অধিকাংশই আওয়ামি পরিবারের সন্তান।যদিও তারা সমাজ সেবার ব্রত নিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক পরিচয় থেকে দূরে থাকে।
শুনলাম এখানে ঢুকলে রাজনীতি করা যায় না। একটা কঠোর নিয়মের মধ্যে চলতে হয়।

এই সময়ে সবাই বঙ্গবন্ধুর একটা ছবি,আমাদের নেত্রীর ছবি প্রোফাইল পিকচারে দিয়ে যখন দলের কর্মী বনে যায়,সুযোগ সু্বিধা নিতে চায় তখন তারা স্রোতের বিপরীতে।
হিতকরীর প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল ইসলাম রয়েল
উনার সাথে অনেক কথা হয়েছে বিভিন্ন সময়।
তাকে এই প্রজন্ম হয়তো জানে না।
ত্যাগী পরিবারের ছেলে।
১৯৯৬ সালে বিপ্লব দলের জন্যই মারা যায়।
তার ছোট ভাই রয়েল। দলের মধ্যে সুবিধাবাদিরা ঢুকে যখন লুটে পুটে খাওয়ার জন্য হাহাকার করে তার পরিবারের প্রাপ্তির খাতা নাকি এখনও শূন্য।
তার হাত ধরে হিতকরী অনেকদূর এগিয়ে যাবে এই শুভকামনা আমি সবসময় করি।

যাই হোক- সংগঠনটার বয়স ২০বছর চলছে।অতিতের কার্যক্রম প্রবাসে থাকার কারনে আমার দেখার সৌভাগ্য না হলেও গত পাঁচ বছরে নিজ চোখে দেখে আসছি।
তবে অন্তরে দাগ কেটেছে এবার।
যেখানে সারা বছর বিভিন্ন গ্রুপের ঢাকডোল পিটানিতে কাটে ফেসবুকে ঢুকা যায় না প্লাষ্টিকের ফুলের ফটোসেশনের স্ট্যাটাসে
জাতির এই কঠিন সময়ে সেই ঢাকডোল পিটানো গ্রুপগুলো যখন হোম কোয়ারেন্টাইনে তখন হিতকরী সদস্যরা বেরিয়ে গেছে জাতির জন্য।
গত দেড় মাস থেকে রাত দিন কাজ করার খবর পাচ্ছি। (নেপথ্যে থেকে আমাদের উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন ভাই ব্যাপক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।)
বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে তারা বেছে বেছে ত্রান পৌছে দিচ্ছে সারা মিরসরাইয়ের আনাছে-কানাছে।
এটা একটা সংগঠনের জন্য চারটিখানি কথা নয়।
কারন বেতনভুক কর্মীদের আগ্রহও তো সবসময় চলমান থাকে না।
তারা কোরবান পর্যন্ত অভাবগ্রস্থদের সাহায্য করার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।

অতিতের অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে চক্ষু শিবির আয়োজন করতে দেখেছি।
সে বছর আমার ইউনিয়ন পরিষদে পার্কভিউর মাধ্যমে বড় ফ্রি চিকিৎসা সেবা ক্যাম্পেইন এর ব্যবস্থা করি আমি।
বড় একটা আয়োজন ছিল।হিতকরীর সদস্যদের ডাকি আমি সেই ঝামেলা সামাল দেয়ার জন্য।
হাজার হাজার মানুষের বড় একটা আয়োজন তারা খুব সুন্দর আর ধৈর্য নিয়ে সামাল দেয়।যা আমাকে অবাক করেছে।বুঝতে পারলাম নিয়মের মধ্যে থেকে মোটামুটি ভালোই অভিজ্ঞতা আছে এদের কর্মীদের।

এই জগতে এমন একজন লোক পাওয়া যাবে না যার শত্রু নেই।
যে হিংসার শিকার হয় না।যার পেছনে নিন্দা নাই।
কিন্তু যারা এসব করে,চেয়ে দেখুন তারা কতটা অক্ষম এ সমাজকে দিতে! তারা তো হিংসা,বাধা,ক্ষতি, পেছনে নিন্দা ছাড়া কিছুই দিতে পারে না।
আমি কখনো লোক চিনতে ভুল করিনা।হিতকরীর ক্ষেত্রেও আমার তাই মনে হয়েছে।

এক ঝাক সৃজনশীল তরুনের সহযোগী হতে পেরে আমি গর্বিত মনে করি সবসময়।
পন্ডিতের কথা- এ সমাজটা খারাপ লোক দ্বারা নস্ট হয় না,নস্ট হয় ভালো লোকগুলোর নির্লিপ্ততার কারনে।
সুতরাং হিতকরীর মত আমরা আমাদের সুন্দর সমাজ গড়ার লক্ষে সক্রিয় হতে পারি, ছোট ছোট উদ্যোগ নিতে পারি।

অথবা হিতকরীর সাথে থেকে সমাজের জন্য ভূমিকা রাখতে পারি।
তাহলে এ সমাজের সকলেই উপকৃত হবে।আর সেই সুফল পেতে হলে দীক্ষা নিতে হবে ছোট ছোট উপকারের।

হয়তো এ কারনেই তারা এই স্লোগানটা তৈরি করেছে- উপকার করো উপকৃত হবে।
তোমাদের সবার জন্য শুভকামনা।
পাশে আছি সবসময়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here