৪১ বছর বয়সী জেএসসি পরীক্ষার্থী!

411

 


নিজস্ব প্রতিনিধি
‘লেখা পড়ার বয়স নাই, চলো সবাই স্কুলে যাই’- শিক্ষা গ্রহণের এই স্লোগানকে বুকে ধারণ করে ৪১ বছর বয়সে অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে চমক দিয়েছে বরিশালের আগৈলঝাড়ার এক শিক্ষার্থী।

অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রাজিহার ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারের শিক্ষার্থী হরষিত বাড়ৈ বৃহস্পতিবারের শ্রীমতি মাতৃ মঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যর সৃষ্টি করেন। জেএসসি পরীক্ষার্থী হরষিত বাড়ৈ আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী উপজেলা কোটালীপাড়া রামশীল গ্রামের মৃত হরেকৃষ্ণ বাড়ৈর ছেলে। তার মায়ের নাম পবিত্র বাড়ৈ।

পরীক্ষার্থী হরষিত বাড়ৈ জানান, চাকুরীর জন্য অন্তত একটি সার্টিফিকেট দরকার। তাছাড়াও কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষা নিয়ে ব্যক্তিজীবনে তিনি স্বাবলম্বী হতে পারবেন বলেই পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। যে বয়সে স্কুলে যাবার কথা ছিল, সে বয়সে পরিবারের দায়িত্ব নেয়ায় স্কুল থেকে ছিটকে পড়েন তিনি।

তিনি আরো বলেন, যখন বুঝতে পেরেছেন যে, চতুর্থ শ্রেণির একটি চাকুরীর আবেদন করতেও অন্তত অষ্টম শ্রেণির একটি সনদপত্র দরকার হয়, তখন পড়াশোনা ছাড়া গতি নাই। এই শিক্ষা থেকে তিনি স্কুলে ভর্তি হয়ে নিয়মিত পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বয়স বেশি হলেও পড়ালেখা কোন হাস্যকর ব্যাপার নয় বলেই বিশ্বাস করেন জেএসসি পরীক্ষার্থী হরষিত বাড়ৈ।

এই মূল মন্ত্র ধারণ করে তিনি রাজিহার ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার থেকে নিয়মিত ছাত্র হিসেবে কম্পিউটার এ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি বিষয়ে ভর্তি হয়ে চলমান জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।

পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাসের নজর কাড়েন পরীক্ষার্থী হরষিত। পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষার যে কোনো বয়স নাই এবং যে কোনো বয়সেই যে লেখাপড়া করা যায় তার অনন্য উদাহরণ শিক্ষার্থী হরষিত। জ্ঞানার্জনের জন্য বয়সের চেয়ে নিজের ইচ্ছা শক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে হরষিত লেখাপড়া করায় বর্তমান সমাজ ও দেশের জন্য এটি একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে থাকবে। হরষিতের নিকট থেকে অনেকেরই শিক্ষা নেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here