মিরসরাইয়ে প্রধান শিক্ষকের বেদম পিটুনিতে শিক্ষার্থী আহত

124

 

মিরসরাই প্রতিনিধি
মিরসরাইয়ে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের বেত্রাঘাতে এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছে। উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের শফিউল আলম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ও ধর্মীয় শিক্ষক মো. আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে ওই শিক্ষার্থীদের এলাকায় একটি ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার অভিযোগে বুধবার ক্লাস চলাকালীন সময়ের এক পর্যায়ে শিক্ষক মো. আবু সুফিয়ান মো. আব্দুল কাইয়ুম নামের এক শিক্ষার্থীকে এলোপাতাড়ি বেত্রাঘাত করেন। বেদম বেত্রাঘাতে পিঠে, হাতে ও পায়ে জখম হয় দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো. আব্দুল কাইয়ুমের। এ সময় মো. মোজাম্মেল, বিবি জুলফা ও তিশা আক্তারকেও বেদম পেটায় ওই শিক্ষক। এক পর্যায়ে বিবি জুলফা নামের ওই শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া আব্দুল কাইয়ুমকে বেত্রাঘাতে হাতে ও পিঠে ক্ষত হয়ে যায়, পরে তাকে পরিবারের লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মস্তাননগর হাসপাতালে ভর্তি করায়।

দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো. আব্দুল কাইয়ুমের মা আলেয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার রাতে আমার ছেলে একটি মাহফিলে যায় আমার সম্মতিতে। এসময় প্রধান শিক্ষক জানতে পারে পড়তে না বসে রাতে ওয়াজ মাহফিলে গিয়েছে কাইয়ুম। পরেরদিন ক্লাসে গেলে মাহফিলে যাওয়ার অজুহাতে তাকে বেদম পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। তার স্কুলের সাদা শার্ট রক্তে লাল হয়ে যায়। পরে আমরা তাকে মস্তানননগর হাসপাতালে ভর্তি করাই।
তিনি বলেন, শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শাসন করবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু একজন শিক্ষক এভাবে পেটাতে পারেনা।

এ বিষয়ে শফিউল আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সুফিয়ান বলেন, শিক্ষার্থীদের বেদম পিটিয়ে আহত করার অভিযোগটি সত্য নয়। আমরা রাতে শিক্ষার্থীদের বাড়ি পরিদর্শন করে মো. মোজাম্মেল, বিবি জুলফা, তিশা আক্তার ও আব্দুল কাইয়ুমকে অধ্যয়নরত অবস্থায় পাইনি। পরের দিন স্কুলে আসলে তাদের প্রত্যেককে অন্যন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে ১ টি করে বেত্রাঘাত করেছি। জুলফা তার বাড়িতে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে সারারাত জেগে ছিলো। ডাক্তার জানায় সারারাত নির্ঘুম থাকায় তার গ্যাসের সমস্যা হয় ও সে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। আমি খোঁজ নিয়েছি, তাকে বাড়িতে আনা হয়েছে এবং সে সুস্থ্য আছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হুমায়ুন কবির খান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। এই মাত্র শুনলাম। দ্রুত খবর নিয়ে দেখছি।

সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকলেও এই নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে প্রতিনিয়ত শ্রেণীকক্ষে বেত নিয়ে শারীরিক ও মানষিকভাবে আগাৎ করে বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here