খুনের আসামিকে সঙ্গে নিয়ে এমপি মিতার শ্রদ্ধাঞ্জলি শহীদ মিনারে

210

 

আলোচিত একটি হত্যামামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিকে সঙ্গে নিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করতে গেলেন এক সাংসদ। হত্যামামলার আসামিকে নিয়ে সাংসদের শহীদ বেদিতে ফুল দেওয়ার ছবি ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় সচেতন মানুষদের মধ্যে।

রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ঘটেছে এমন ঘটনা। এদিন সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতা আরও ৯ জনের সাথে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করছেন— এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই ছবিতে সাংসদের পাশে কালো একটি ক্যাপ পরিহিত অবস্থায় উপজেলা যুবলীগের সদস্য ওমর ফারুককেও দেখা যায়।

ফারুক সন্দ্বীপের আলোচিত সৌরভ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। ফারুকের বাড়ি থেকে তার দেওয়া তথ্যে হত্যার শিকার হওয়া সৌরভের মোবাইল ফোন ও লুঙ্গির একটা অংশও উদ্ধার করে পুলিশ।

এদিকে হত্যামামলার এই আসামি উপজেলা যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ওমর ফারুককে সঙ্গে নিয়ে ফুল দিলেও তাকে ‘চেনেন না’ বলে দাবি করেছেন সন্দ্বীপের সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতা।

তবে হত্যা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত আসামিদের নিয়ে সাংসদের চলাফেরা নতুন কিছু নয় বলে মন্তব্য করছেন সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা বলেন, ‘হত্যামামলার আসামি নিয়ে শহীদ মিনারে যাওয়া নিয়ে কথা বলার কী আছে! তিনি তো সারাক্ষণই দাগী আসামিদের নিয়েই চলাফেরা করেন। এসব বলে কী হবে?’

তবে ফারুককে ‘চেনেন না’ দাবি করে সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি তো ফারুককে চিনি না। সে কি ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি? তাহলে আমি এক্ষুণি ওসিকে ফোন করে বলে দিচ্ছি তাকে গ্রেপ্তার করার জন্য।’

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা যুবলীগের এক নেতা বলেন, ‘ফারুক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমানের সাথে সারাদিনই থাকে। তাছাড়া ফারুকের বিষয়ে উপজেলা যুবলীগ সংবাদ সম্মেলনও করেছিল। সৌরভ হত্যা মামলা খুবই আলোচিত একটি মামলা। সাংসদ সেই মামলার বিষয়ে জানেন না কিংবা ফারুককে চেনেন না এমন দাবি হাস্যকর।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাইন উদ্দিন মিশন বলেন, ‘ফারুক চার্জশিটভুক্ত আসামি। কিন্তু সে তো জামিনে আছে। রাজনৈতিক কর্মীদের বিরুদ্ধে কত মামলাই তো হয়। বিচারে দোষী হওয়ার আগে তো আমরা তাকে দোষী ভাবতে পারি না।’

হত্যামামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিকে নিয়ে এমপির শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ায় শহীদদের স্মৃতির প্রতি অসম্মান করা হয়েছে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি শুধু মুক্তিযোদ্ধাদেরকে নিয়েই মালা দিয়েছি। আমার সাথে তো কোন ক্রিমিনাল ছিল না। যারা ক্ষমতার মালিক তাদের সাথে তো ক্রিমিনালেরা থাকবে তাদের বাঁচার জন্য, এটা স্বাভাবিক।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here